
গত ২৫ মে দৈনিক সাতনদী পত্রিকার প্রথম পাতায় “রক্ষক যেখানে ভক্ষক” ‘সাতক্ষীরা পৌরসভায় প্রাক্করন ব্যায় তিন গুন’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পৌর মেয়র তাজিকিন আহমেদ চিশতি। তিনি সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাতকারে কাগজপত্রাদি দিয়ে মৌখিকভাবে বলেন, কোন এক ব্যক্তিকে খুশী করার জন্য খবরটি ছাপা হয়েছে। খবরের কিছু অংশ সত্য হলেও অধিকাংশ তথ্য নির্ভর নয়। খবরটি উদ্দেশ্য মূলক।
পৌরদিঘীর ও পাকাপোলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য জারীকৃত টেন্ডার নোটিশ, কার্যাদেশ, ইস্টিমেট, চুক্তিপত্র, প্রদানকৃত চ‚ড়ান্ত বিল ও টেন্ডারের সিংহভাগ কাজ বাতিলের চিঠি-পত্রাদি সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে দিয়ে বর্ণিত বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে একটি খবর প্রকাশের অনুরোধ জানান।
পৌরমেয়রের সঙ্গে সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এ আলোচনায় সম্পাদক হাবিবুর রহমান চিঠি-পত্রাদি গ্রহণ করেন। গত ২৭ মে আইনজীবির মাধ্যমে মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি সম্পাদক বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
চিঠি-পত্রাদি যাচাই-বাছাই করে ও প্রাপ্ত লিগ্যাল নোটিশ থেকে জানা যায়, বিগত ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পাকাপুল ব্রিজ সৌন্দর্য বর্ধনকরন ও পৌর রাজ্জাক পার্ক দীঘির প্রাচীর আলোকিত করনের জন্য ১৮ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা প্রাক্কলন ব্যয় দেখিয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়।
২০১৯ সালের ৬ মার্চ মেসার্স অরিন এন্টারপ্রাইকে কার্যাদেশ দেয়া হবে। চুক্তিমূল্য বলা হয় ১৯,৬৯,৮০০টাকা। পরে তিনশ টাকার ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের একটি চুক্তিপত্রও সম্পাদিক হয় (তারিখ অস্পষ্ট)। ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি পৌরসভার মাসিক সাধারণ সভায় ৩নং প্যাকেজের অংশ বিশেষ পাকাপুল ব্রিজ সৌন্দর্যবর্ধনকরন কাজটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আপত্তির কারণে বাতিল করা হয়। অবশিষ্ট ১টি প্যাকেজের (ক) শহীদ আঃ রাজ্জাক পার্কস্থ শিশুপার্কে দিঘর ওপর ক্যাবল কার নির্মান, (খ) শহীদ আঃ রাজ্জাক পার্কস্থ শিশুপার্কে স্বপ্নপুরি (চক্রাকার রাইড) নির্মান কাজ দুটিই জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে বাতিল করা হয়।
প্রকাশিত সংবাদে মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির নামটি অসাবধানতাবশতঃ আসে। এজন্য কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। প্রকৃতপক্ষে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সরাসরি অভিযোগ ছিল কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি অবগত হওয়ার সাথে সাথে অনলাইন সংস্করনে খবরটি সংশোধন করা হয়। সেখানে মেয়রের বিরুদ্ধের অভিযোগ সরিয়ে নেয়া হয়।
লিগ্যাল নোটিশ থেকে জানা যায়, বর্ণিত কাজের সিংহভাগ বাতিলের পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আয়কর ভ্যাট বাদে ২,৫১,০০০টাকা এবং জামানত বাবদ ৩১,০০০টাকা গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: খবরটি ছাপা হয় অরিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত¡াধীকারী মজনুর অভিযোগের ভিত্তিতে। মজনুর অভিযোগ ছিল কার্যাদেশ পাওয়ার পর কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান তার মনঃপুত লোক দিয়ে কাজটি করাবেন বলে তাকে জানান। মজনু এও অভিযোগ করেছিলেন মেয়র তাকে সরাসরি না বললেও নেপথ্যে ছিলেন। তবে কাগজ পত্রাদি যাচাই-বাছাইয়ে অরিন এন্টারপ্রাইজের মজনুই কাজ করেছেন বলে প্রতিয়মান হয়। খবরটি প্রকাশের সময় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানের বক্তব্যও ছাপা হয়। পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতিকে মোবাইলে পাওয়া না যাওয়ায় তার বক্তব্য ছাপা সম্ভব হয়নি। সাতনদী সত্য প্রকাশে সর্বদা অবিচল। কোন প্রকার প্রভাবিত খবর ছাপা থেকে বিরত থাকা আমাদের আদর্শ। আশাকরি উপরোক্ত প্রতিবাদ, দুঃখপ্রকাশ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য থেকে সবপক্ষই সন্তুষ্ট থাকবেন।