আহাদুর রহমান:
মিষ্টি কথা, সাথে আছে মোটা অংকের মুনাফার হাতছানি। নিয়মিত যোগযোগ। এভাবেই ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসার পার্টনারশিপের ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। একের পর এক নতুন চুক্তি। তারপর হয়রানি করে পার্টনারদের সর্বশান্ত করা। এ কৌশলেই ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসাকে সামনে রেখে টাকা কামিয়ে থাকেন সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার বুধহাটা গ্রামের নজরুল ইসলাম। তার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার পথে মনিরুল ইসলাম ও এখলাছুর রহমান।
আজকের পর্বে পাঠকদের জ্ঞাতার্থে নজরুল ও তার দুই ব্যবসায়িক পার্টনার মনিরুল ও এখলাছুর এর মধ্যে সম্পাদিক চুক্তির বিষয়ে।
কি ছিল নজরুল, মনিরুল ও এখলাছুরদের অংশীদারী চুক্তিপত্রে-
মোঃ নজরুল ইসলাম বুধহাটা করিম সুপার মার্কেটে দোকান ভাড়া নিয়া প্রিয়া ইলেকট্রিক নামে র্দীর্ঘ দিন যাবৎ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। টিভি, ফ্রিজ ও ওয়াশিং মেশিনসহ তিনি বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র বিক্রয় করেন। এমতাবস্থায় নজরুল তার ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ভাবে মাইওয়ান কোম্পানির কাছে প্রায় ২২,০০,০০০ (বাইশ লক্ষ) টাকার মত ঋণ হয়ে যায়। তখন নজরুল তার ঋণের কথা মনিরুল ও এখলাছুরদের জানান। নজরুল, মনিরুল ও এখলাছুর আলোচনা সাপেক্ষে কিছু শর্ত মোতাবেক একটি ব্যবসায়িক চুক্তি করেন।
শর্তগুলো হলো:
প্রথম পক্ষের (নজরুল ইসলামের) ঋনের বাবদ দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষ (মনিরুল ইসলাম ও এখলাছুর রহমান) অদ্য ১৫ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে নগদ ২০,০০,০০০(বিশ লক্ষ) টাকা প্রদান করলেন।
এখানে তিনি উল্লেখ করেন, “আমি প্রথম পক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষের নিকট হইতে নগদ ২০,০০,০০০(বিশ লক্ষ) টাকা অদ্য গ্রহণ করিয়া আমার দেনা পরিশোধ করিলাম।
এবং আমার দোকানের মালিকানা ভাবে বা ব্যবসায়িক পার্টনার হিসাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষকে দোকানের মালামাল ও জিনিসপত্র বুঝাইয়া দিলাম। আগামী ০১জানুয়ারি, ২০২০ ইং সাল থেকে নতুন করে ওই দোকানের ব্যবসায় শুরু হবে। যা দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষ সকল প্রকার মালামাল ক্রয় করে ব্যবসা করবেন। যার লভ্যাংশ ৩ ভাগে ভাগ হবে। যার ভাগ তিন পক্ষ সমান ভাবে ভাগ করে নিবে। ব্যববসা শুরু হওয়ার পর দোকানের সকল হিসাব দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষদ্বয় রাখবেন। ”
“উল্লেখ্য যে, প্রথম পক্ষের লাভের টাকা থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষের ২০,০০,০০০(বিশ লক্ষ) টাকা কিছু কিছু করে পরিশোধ করবে। এবং বাকি টাকা ব্যবসা পরিচালনা করা কালীন প্রথম পক্ষ শোধ করতে না পারলে তার ৩২৭ নং দলিলে ধন্যহাটি মৌজার কালিবাড়ী বাজার সংলগ্ন আড়াই শতক পৈত্রিক জমি দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষের নামে রেজিষ্ট্রি অথবা বিক্রি করে টাকা দিবেন। এছাড়াও নজরুল ইসলামের নেওয়া ২০,০০,০০০(বিশ লক্ষ)টাকা শোধ না হলে বুধহাটা বাজারের রুপালী ব্যাংকের
CTLH 4449607 ও CTLH 4449608
মোট দুইটা চেক মনিরুল ইসলাম ও এখলাছুর রহমানকে দিয়েছেন। যাতে নজরুল ইসলাম কোন রকম ছল-চাতুরি বা তালবাহানা করলে মনিরুল ও এখলাছুর আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ছাড়াও ব্যবসায় পরিচালনা করা কালীন কেউ ব্যবসার ক্ষতি করবেনা ও কোন টাকা পয়সা নিলে খাতায় লিপিবদ্ধ করে রাখবে মর্মে অঙ্গীকার।”
কিন্তু এখন নজরুল ইসলাম সকল চুক্তি ভঙ্গ করে গোপনে মালামাল বিক্রীর বকেয়া টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করছেন। সেই সাথে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রচার দিয়ে বেড়াচ্ছেন মনিরুল ও এখলাছুরের কাছ থেকে তিনি সুদে টাকা নিয়েছেন।