বাণিজ্য ডেস্ক:
ঢাকা মোটর শো-তে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) টিম ‘কিলো ফ্লাইট’ নিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ হাতে বানানো পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি রেসিং কার। পাটশিল্পকে এগিয়ে নিতে এ রেসিং কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দর্শনার্থী ও সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত ঢাকা মোটর শো’তে দেখা মেলে এ রেসিং কারটির।
এ বিষয়ে টিম কিলো ফ্লাইটের সদস্য জাহিদ সময় সংবাদকে বলেন, গাড়িটির সম্পূর্ণ বডি ও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই রেসিং কারটিতে উন্নত মানের ইঞ্জিন, গিয়ার, ব্রেক, মিটার দেয়া রয়েছে। চালকের আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যও রয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা। যা কিনা সম্পূর্ণ হাতেই বানানো। ঘণ্টায় এর গতিবেগ ১৬২ কিলোমিটার।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত এই ধরনের গাড়িতে কার্বন ফাইবার ব্যবহার করা হয়। তবে দেশীয় তৈরি জুট ফাইবার নিয়ে কাজ করার চিন্তা থেকেই এ গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করতে পারে। এতে হারিয়ে যাওয়া পাট-শিল্পের প্রসার বাড়বে।
এছাড়া পাটের আঁশ নিয়ে তাদের গবেষণা এখনো চলমান আছে বলে জানান তিনি। আর ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত পরিসরে পাটের আঁশের ব্যবহার বাড়াতে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে কিলো ফ্লাইট।
পাটের আঁশ দিয়েই কেন রেসিং কার এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে জাহিদ বলেন, ‘কোনো দেশ যখন কোনো কিছুর উন্নয়নের চেষ্টা করে তখন নিজেদের দেশের সহজলভ্য পণ্য কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেটাই চিন্তা করেন। আমরাও সেদিক বিবেচনায় রেখে পাটকে বেছে নিয়েছি। এছাড়া পাট শতভাগ পরিবেশবান্ধব।’
এ বিষয়ে আরেক সদস্য এহসানুল বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার দেশ। আমাদের রয়েছে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার। সেখান থেকে অটোমোবাইলের ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিতে ও দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে আমাদের যদি অংশগ্রহণ থাকে, আমরা গর্বিত হব।’
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ‘১৬তম ঢাকা মোটর শো ২০২৩”-এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম। ঢাকা মোটর শো চলাকালীন একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে “৭ম ঢাকা বাইক শো-২০২৩”, “৬ষ্ঠ ঢাকা অটোপার্টস শো ২০২২" এবং "৫ম ঢাকা কমার্শিয়াল অটোমোটিভ শো ২০২৩"।’
তিন দিনব্যাপী চলমান এ প্রদর্শনীতে জাপান, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ প্রায় ১৫টি দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও প্রদর্শক অংশ নিয়েছে। ৫৫০টি বুথে মোটরগাড়ি, মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ প্রদর্শন করছেন ৩৩০ জন প্রদর্শক।
বাংলাদেশের অটোমোটিভ শিল্পের একমাত্র এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে ২৫টির বেশি ভারতীয় কোম্পানি অংশ নিয়েছে। মোটরপ্রেমী ও অটো শিল্প ব্যবসার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একটি ওয়ানস্টপ প্লাটফর্ম এই ঢাকা মোটর শো।