
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনে বনবিভাগের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলে বাওয়ালীরা। এক দিকে বিলিন করে যাওয়া ঘূর্নিঝড় আম্পান অন্য দিকে মহামারি করোনা ভাইরাস্ এর মধ্যে বনবিভাগের চাপ! এ ধরনের অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে যে, জোয়ারে ভাঙ্গা, ভাটায় গড়া নদীর চরে বসাবস জেলেরা প্রতি নিয়ত সুন্দরবনের বাঘের আক্রমন, নদীতে কুমিরের আক্রমন, ঘূর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাস্ সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সুন্দরবনে মৎস্য, কাঁকড়া, মধু আহারণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু সুন্দরবনে প্রবেশের সময় পাশ পার্মিট তৈরির সময়ে মাথাপিছু জেলেদের কাছ থেকে সরকারী পাশ পার্মিট কর ছাড়াও বনবিভাগের কর্মকর্তারা নিচ্ছেন উৎবৃত্ত অর্থ। যার ফলে জেলে বাওয়ালীদের নিতে হচ্ছে সুদ বা এনজিও থেকে লোন। আর এই টাকা শোধ করা সম্ভব হয় না তাদের। দিনে দিনে ঋণে জড়িয়ে ঘর সংসার রেখে পড়ে থাকতে হচ্ছে সুন্দরবনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু জেলে জানিয়েছেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন, কদমতলা ফরেস্ট স্টেশন, কপাতক্ষ ফরেস্ট স্টেশন ও কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন থেকে পাশপার্মিট নিতে গেলে ৪শ টাকা ও মাথাপিছু আলাদা ৫শ টাকা দিতে হয়। এর পরে নদীতে গিয়ে টহল ফাঁড়ীর কর্মকর্তাদের সাথে দেখা হলেই ২শ টাকা এবং নৌ-পুলিশকে ২শ টাকা দিতে হয়। আমাদের বনে মাছ ধরতে গেলেই ২ হাজার টাকা পকেটে নিয়ে যেতে হয়। তবে যাদের কাছে টাকা থাকে না তাদের নাম ঠিকানা দিয়ে তালিকা তৈরি করেন এবং পরে নদীতে গেলে বাকী টাকা সহ তখনকারটা টাকা বুঝিয়ে দিতে হয়। আমরা টাকা না দিলে বিভিন্ন কারন দেখিয়ে ঝমেলা সৃষ্টি করেন এবং নৌকা থেকে জাল তুলে নিয়ে মামলা বা জাল পুড়িয়ে দিয়ে থাকেন।
এই বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা কে.এম হাসান বলেন, আমি কি রেভিনিউ আদায় করি না কি ? আমার কাছে জিজ্ঞাসা করছেন কেন ? যদি উপযুক্ত প্রমান থাকে তবে আমার কাছে পাঠান আমি ব্যবস্থা নেব।
হরিনগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এনামুল বলেন, একদিন অফিসে আসেন। চা খাওয়ার দাওয়াত থাকলো। সাক্ষাতে আলাপ হবে।
বর্তমানে দেশের এই অর্থনৈতিক মন্দা বা আয়ের উৎস হিসাবে খারাপ পরিস্তিততে বনবিভাগের এমন ধরনের কর্মকান্ডে স্থানীয় সচেতন মহল নিন্দা জানিয়েছেন। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।