সচ্চিদানন্দদেসদয়:
করোনা ভাইরাস মরন ব্যাধি হিসাবে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে যাকে নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে এই মুহূর্তে দেশ সাধারন ছুটির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ এই কোরনার প্রভাব বর্তমান সময়ের লকডাউন আতঙ্ক প্রভাব ফেলছে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও।
করোনা চরম আঘাত হানলেও মনে হয় কিছু মানুষের মনুষ্যত্বে আঘাত হানতে পারে নি। তাই মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারের আড়ালেও কিছু মানুষ নিজেদের 'কাজ' করে চলেছেন এবং প্রচারের আড়ালেই তাঁরা থাকতে চাইছেন। তাই এই প্রতিবেদনেও শুধুমাত্র ঘটনাক্রমই তুলে ধরা হচ্ছে, সেই সব ব্যক্তিকে সম্মান জানিয়ে। তাদের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে কোনও নাম বা তাদের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে না।
করোনা আটকাতে লকডাউন তো চলছে৷ কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন রাস্তার কুকুর-বিড়ালগুলির কী অবস্থা হচ্ছে এই সময়? প্রাণীগুলো তো আর নিজেদের খাওয়ার নিজে জোগাড় করতে পারে না। গৃহস্থ বাড়ির এঁটো–কাঁটা, বা রাস্তার ধারের চায়ের দোকান, রুটির দোকান বা ফাস্টফুডের দোকান, হোটেল রেস্তরা এদের ভরসা ছিল। সেখান থেকে পরিমাণে অল্প হলেও দিনে কিছুটা খাবার জুটতো এদের। কিন্তু এখন তো তাও বন্ধ। সরকার কাদের খাওয়াবে মানুষ কে নাকি এই অবলাদের! বিক্ষিপ্তভাবে গৃহস্থ, পশুপ্রেমি কিছু এলাকায় রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। কিন্তু ব্যতিক্রম তো থাকেই। আর থাকে এই সব নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু মানুষ। প্রতি পাড়াতেই এরকম একজন-দুজন পশু প্রেমীর দেখা মিলে যায়। আর সেটাই আশার কথা। এই মানুষগুলো এই পরিস্থিতিতেও নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়ম করে দু'বেলা খেতে দিচ্ছেন এলাকার কুকুর-বিড়ালগুলিকে। আগে হয়তো পাড়ার ৩-৪টে কুকুরকে খাওয়াতেন, এখন খিদের চোটে ঘুড়ে বেড়ানো অবলাগুলিকে এভাবে দেখতে না পেয়ে হয়তো ৮-১০টাকে খাওয়াচ্ছেন। কষ্ট হচ্ছে তবুও খাওয়াচ্ছেন। বাঁচিয়ে রাখছেন ওদের।
এত খাওয়ার বা টাকা এই বাজারে খরচ করতে ভয় লাগছে না? হেসেই জবাব দিচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তার বদলে যে এতগুলো প্রাণীর ভালোবাসা পাওয়া যাচ্ছে তাই তো অনেক। আরও বললেন, আগে ৫-৭ টা কে খাওয়াতেন, এখন সংখ্যাটা বেড়েছে। ওরমভাবে অবলাগুলো মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে না দিয়ে তো আর পারা যায় না! তাই ভাত পারলে ভাত, মাছ পারলে মাছ, রুটি পারলে রুটি নইলে বিস্কুট খাইয়ে দিচ্ছেন এলাকার হাসি, হরুদ, ভুলু, মেছিদের। এলাকার পশুপ্রেমীরা যে ভাবে পারছেন খাওয়াছেন। কোনও রকম প্রচার ছাড়াই কেবল মনের আনন্দে, মানবিকতার তাগিদে এই কাজ করে চলেছেন তাঁরা, ভবিষ্যতেও করে যাবেন।