
এম. আর মিঠু:
শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষকে নিয়ে ভাবেন। ‘গ্রাম হবে শহর’ এই চিন্তা নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। যেদিকে তাকাই সেদিকে উন্নয়নের ছোঁয়া। এটা মমতাময়ী মা শেখ হাসিনার অবদান। উন্নয়নের কাতারে দেশ পৌছে গেছে। উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকলে এশিয়ার সেরা দেশ হবে বাংলাদেশ।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান অতিথির বক্তব্যদানকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক-এমপি এসব কথা বলেন।
তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, বাংলাদেশকে দেখে অনেক দেশ অনুকরন করছে। এ দেশকে উন্নতি করতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। নেত্রী ভাল থাকলে আমরা সবাই ভাল থাকব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষমতা মূখ্য বিষয় নয়। যার যার অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগকে ভালবেসে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হতে চলেছে একটি উন্নয়নশীল, সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ন দেশ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য এস.এম কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। আওয়ামী লীগ মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধু। যার জন্ম না হলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেতাম না, যার জন্ম না হলে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ এই পরিচিতি লাভ করত না। শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা। বিশ্ব নেতা হয়েছে যিনি তিনি মোদের সবার প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট হাওয়া ভবনে বসে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্ণেল নুর সহ বসে ষড়যন্ত্র করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ১৩টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছিল। সেই হামলায় নেত্রী বেঁচে গেলেও আইভি রহমান সহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, আজকের বাংলাদেশ আমরা ভাল আছি।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এই জনপদে জিয়ার দুঃশাসনে আওয়ামী লীগের সাড়ে চার লক্ষ নেতা-কর্মী গুম, খুন, নির্যাতন ও হত্যা করেছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সেদিন জিয়ার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করা কঠিন ছিল। সেদিন যারা আওয়ামী লীগ করত আর আজকে যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য। তাদের ত্যাগের কাছে আমাদের ত্যাগের কোন মুল্য নেই। আজকের আওয়ামী লীগ, আপনাদের ত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার আস্থা হচ্ছে আপনারা। শেখ হাসিনা নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে না। শেখ হাসিনা যা করে আমরা যদি তার ৫০ ভাগ করতাম, আমাদের বিপক্ষে উপজেলা বা তৃণমুলের কর্মীরা বিপক্ষে যেতে পারে না। দেশের ৯৯ ভাগ লোক মনে করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতি মুক্ত হবে। রাজনীতি খুব খারাপ হয়ে গেছে। আমার ক্ষমতা আছে, নেতা বানাবো টাকার বিনিময়। টাকার বিনিময়ে যারা নেতা বানিয়েছেন তারা সব আউট হয়ে গেছেন। ক্ষমতা, এত বড় ক্ষমতা আওয়ামী লীগের কোন নেতাই তাদের সামনেই কিছু ছিল না। শেখ হাসিনার দেয়া দায়িত্ব পেয়ে নেতা বানানোর জন্য যারা টাকা চায় তারা মানুষ না জানোয়ার। টাকা নিয়ে যারা নেতা বানায় তারা শেখ হাসিনার আদর্শের সাথে প্রতারনা করে। শেখ হাসিনা বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়। দুর্নীতি করলে রেহাই নেই। যারা দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদ বানিয়েছেন কেউ রেহাই পাবেন না। ফখরুলের নেত্রী খালেদা জিয়া, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জেল খাটছেন। খালেদার সন্তান তারেক জিয়া বিশ্ব দুর্নীতিতে তৃতীয়। ২০০৮ সালের পরে যারা আওয়ামী লীগে আসছে তারা কোন দায়িত্ব পাবে না। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যারা আওয়ামী লীগের লড়াই-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে, বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করেছে তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। মানুষের আস্থা, ভালবাসা ও সততা ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। মানুষের কল্যানে কাজ করলে আস্থা ও ভালবাসা অর্জন করা যায়। শেখ হাসিনা ঘুমিয়ে যাবে বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। শেখ হাসিনা জেগে থাকলে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। তিনি সবশেষে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া কামনা করেন।
ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম’র সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মুনসুর আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর-০২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ও তালা-কলারোয়ার সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আশাশুনি উপজেলা সম্মেলন তদারকি কমিটির প্রধান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু। অনুষ্ঠানে জেলা, বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
সম্মেলনের সবশেষে বিশেষ অতিথি এস,এম কামাল হোসেন ত্রি-বার্ষিক কমিটির নাম ঘোষনা করেন এতে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এবিএম মোস্তাকিম, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শম্ভুজিত মন্ডল ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে এস,এম হুমায়ন কবির সুমন নির্বাচিত হন।
সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু।