নিজস্ব প্রতিবেদক: অসংলগ্ন ও ভুল তথ্য উপস্থাপন করে মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্নের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার পরিচ্ছন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি চক্র মাঠে নেমেছে। এমনকি নিজেদের নামে প্রকাশিত মনগড়া বক্তব্য গনমাধ্যমে প্রকাশিত হতে দেখে বিস্মিত হয়েছেনও কথিত এক প্রার্থী।
বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও অভিযোগকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে লোক নিয়োগের লক্ষ্যে গত ২১/০৬/২২ইং খ্রি: তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন সম্পন্নের নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশনা মোতাবেক ০৫/০৭/২০২২ খ্রিঃ তারিখে বিকাল ৪:০০টা পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়া হয়। মাদ্রাসাটিতে উপাধ্যক্ষ পদে ৩জন, অফিস সহকারি পদে ৮জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৫জন, আয়া পদে ৪জন আবেদন করে। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে এই পদগুলোর মধ্যে শুধু মাত্র উপাধ্যক্ষ পদে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি তিন বছর সহকারি অধ্যাপক ও ১৪ বছর আরবী বিষয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। তাই অনভিজ্ঞতার কারনে প্রায়ই উপাধ্যক্ষ পদে আবেদন কম হয়।
গত ৬ জুলাই বুধবার গনমাধ্যমে আবেদন জমার শেষ দিনের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবেদন জমা নেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। বলা হয় মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় ৪টি পদের বিপরিতে অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য এভাবে প্রাথীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু উপরোল্লিখিত সংখ্যা গুলোই প্রমান করে যে আসলেই প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, ৪টি পদের বিপরীতে ২০জন প্রার্থী।
এদিকে আব্দুল গফ্ফারের নাম ব্যবহার করে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেটি নাকি ভুয়া। ক্ষোভ প্রকাশ করে আব্দুল গফ্ফার সাতনদীকে জানান, আমি আবেদন করতে চেয়েছিলাম। তবে তা আর হয়ে উঠেনি। কিন্তু গনমাধ্যমে আমার যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো সম্প‚র্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোন গনমাধ্যম কর্মীর সাথে কোনরূপ কথা বা যোগাযোগ করিনি। যা করেছে সবটাই ইয়াকুব।
একটি প্রশ্নের জবাবে গফ্ফার জানান, আমার বাড়ি থেকে মাদ্রাসার দূরত্ব মাত্র দুই মিনিটের পথ। আমার সেরকম ইচ্ছা নেই, থাকলে আমি অবশ্যই আবেদনপত্র জমা দিতে পারতাম।
মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার নিয়োগ প্রক্রিয়ানিয়ে অন্য অভিযোগকারী ইয়াকুব গনমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে জানায় যে, ৫তারিখ মঙ্গলবার বারোটার সময় ৫০০ টাকা দিয়ে ৬১০নং রশিদের মাধ্যমে অধ্যক্ষ বরাবর টাকা জমা দেন। ইয়াকুব আরো বলে অধ্যক্ষ কিছু কাগজপত্র তাকে ফটোকপি করতে পাঠায়। ইয়াকুব বাজারে গিয়ে ফটোকপি করে মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে দেখে মাদ্রাসা কক্ষে তালা ঝুলছে। তবে সাতনদীর সাথে সাক্ষাৎকারে ইয়াকুব জানায় সাড়ে ১২টার দিকে সে মাদ্রাসায় গিয়ে টাকা জমা দেয়। এরপর সে বাড়ি যায় কয়েকটি কাগজ আনতে। ৩টার সময় অফিসে গিয়ে দেখে মাদ্রাসা বন্ধ। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, নিরাপত্তা প্রহরী পদে দেবহাটাসহ আরও দ‚রের প্রার্থীরা যথাসময়ে আবেদন করতে পারলেও ইয়াকুব ওই মাদ্রাসার নিরপত্তা প্রহরী পদে আবেদনের টাকা জমা দিলেও আবেদনপত্র জমা দিতে পারেনি। আশ্চর্যের বিষয় হলো ইয়াকুবের বাড়ি মাদ্রাসা থেকে পাঁচ মিনিটের পায়ে হাটা পথ।
এদিকে দায়িত্বশীল গনমাধ্যমে ভুল তথ্য উপস্থাপনের বিষয় নিয়েও সামাজিক চর্চা হচ্ছে সর্বত্র। সংবাদে বলা হয় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: জাহিদুর রহমান তাদের জানিয়েছে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। হাস্যকর বিষয় হলো তিনি পবিত্র হজ্জব্রত পালনের উদ্দেশ্যে ঘটনার তিনদিন পূর্বে ৩ জুলাই মক্কায় পৌছান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নাসির উদ্দীন সাতনদীকে জানায় ইয়াকুব নিজে না এসে অন্য একজনকে দিয়ে টাকা জমা দেয়। তবে কোন আবেদনপত্র সে নিজে বা কাউকে দিয়ে জমা দিতে পাঠায়নি। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে একজন সংবাদকর্মী তার কাছে টাকা দিয়ে নিয়োগ হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চান। উপরোক্ত কোন পদে কতজন আবেদন করেছে এ তথ্যগুলো নিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
অধ্যক্ষ নাসির উদ্দীন আরও জানান, একটি চক্রের সহায়তায় ইয়াকুব নিয়োগ প্রক্রীয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বাধাগ্রস্থ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তাই আমাদের প্রতিষ্ঠান, আমাকে ও আমাদের প্রতিষ্ঠানের সভাপতির নামে মনগড়া ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের অব্যাহত চেষ্টা করছে। মি. নাসির উদ্দীন যোগ করে বলেন, এর আগেও ইয়াকুব মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদন করে। কিন্তু অযোগ্য হওয়ায় চাকুরি পায়নি। সে ক্ষোভে আদালতে ৪৭/১৬নং একটি মামলা দায়ের করে। তবে অভিযোগ মিথ্যা প্রতিপন্ন হওয়ায় আদালতে মামলা খারিজ হয়ে যায়। সে ক্ষোভ থেকে সম্প‚র্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে ইয়াকুব আবেদনের টাকা জমা দিয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়নি। অথচ সকল প্রার্থীর থেকে তার বাড়ির দূরত্ব মাদ্রাসার সব থেকে নিকটে।