রুবেল হোসেন: ‘চলতি নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকারিতা হারিয়েছে’ দাবী করে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবীতে সমাবেশ করেছে উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকাল ৪ টায় উক্ত দাবীতে রাজধানীর পুরানো পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সমানে সমাবেশ করে দলটি। সিপিবির সভাপতি কমরেড শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ, কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রমিক নেতা মাহবুব আলম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, হাফিজুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম, শাহীন রহমান, অধাপক এ এন রাশেদাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সিপিবির সভাপতি কমরেড শাহ আলম বলেন, “যে নির্বাচন ব্যবস্থা, টাকার খেলা, পেশিশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজির খেলা সরকারগুলো বহাল রেখেছে তাতে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটার কোনো সুযোগ নাই। এ ভোটের নামে প্রহসন, গদি পরিবর্তন জনগণের জীবন মানের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। কাজেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংষ্কার করতে হবে। পুরো ব্যবস্থা বদল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে এরকম কোনো হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। যারা এর মদদ যোগাবে তাদেরও উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।”
সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই সরকার সাধারণ জনগণ, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে নাই। উপরন্তু একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিত বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোয় মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দুর্নীতি-লুটপাট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সরকারের সর্বত্র আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নাই বরং একের পর এক বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে।”
গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুঁজিবাদী লুটপাটতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদ দেশ ও জাতির শত্রু আখ্যা দিয়ে প্রিন্স বলেন, এদের ছাড় দিয়ে গণতন্ত্রকে স্থায়ী করা যাবে না। এদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে হবে। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দূর করতে সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়তে হবে। তিনি দুঃশাসনের অবসানে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।”
সিপিবি নেতৃবৃন্দ মনে করেন, চলতি নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকারিতা হারিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রধান দাবি। এই মূহূর্তে এর কোনো বিকল্প নেই। কাজেই জনগণের দাবিকে মেনে নিয়ে সরকারে অবিলম্বে এ ব্যবস্থা নিতে হবে। সমাবেশ থেকে জেলা উপজেলায় জনসভা। সেপ্টেম্বরে ভোট ও ভাতের দাবিতে গণজাগরণ অভিযান এর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।