নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পারিবারিকরণ, কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যসহ অনিয়মের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও পারিবারিকভাবে জামায়ত ও বিএনপির সংশ্লিষ্টতাসহ কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী রিপনের আপন ভগ্নীপতি তিনি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পূর্বে সোনালী ব্যাংকের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারি ছিলো শওকত হোসেইন। অভিযোগ আছে সেই ব্যাংকের টাকা লুট করে লিবিয়া পালিয়ে যান তিনি। তার এলাকার লোক তাকে মৃত ভেবেছিলো। একাধিক বার তার রুহের মাগফেরাত কামনায় গ্রামের বাড়িতে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ১০-১৫ বছর পর তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তারপর বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৪ সালে তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাকে। ঠিকাদারি ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকার মালিক হন তিনি। ঝাউডাঙ্গা ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা ছিলেন মাওলানা আইয়ুব হোসেন আনছারি, মাস্টার আজিজ, মাস্টার আলিম, জামাল, শওকত হোসেন সহ ১৫জন। কিন্তু প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি বলে সম্বোধীত। ঝাউডাঙ্গা ডিগ্্ির কলেজের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় তার নিজ আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে থেকে প্রায় ১০জনকে কলেজের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দান করেছেন শওকত হোসেন। তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলেন, প্রভাষক হাসান মাহমুদ জয়, রাজ, তার আপন শালিকা লাভলি, প্রভাষক পদে ভাইপো মিন্টুর স্ত্রী, তার ভাইর বেয়াই নৈশপ্রহরী পদে আজিমদ্দীনসহ অনেকে। এদের মধ্যে শওকত হোসের আপন শ্যলক কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার আসামী শওকত হোসেনের আপন বোন লাভলি। এছাড়াও নৈশ প্রহরী আজিমদ্দীনের বিরুদ্ধে গাঁজা সেবন ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। তাদের রাজ ও রানা লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নে মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়। সম্প্রতি ঝাউডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে অজয় কুমারকে ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দান করেন। ডিগ্রি বা স্নাতক পাশ না হয়েও বিধি বর্হিভ‚তভাবে ঝাউডাঙ্গার মোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। শওকত হোসেনের আপন ভাই আলাউদ্দীন জামায়াতের কর্মী ও সোনা পাচারকারী। অন্যভাই খায়ের বিএনপির নিবেদিত প্রাণ কর্মী।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসাইন সাতনদীকে জানান, ‘নিয়োগের টাকা আমি ব্যাংকের মাধ্যমে জমা করতাম কলেজে। ১৭ বছর সভাপতি ছিলাম। জনসভায় আমি রবি ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলিনা। ইয়াররব আমার বিরুদ্ধে জনসভায় মিথ্যাচার করেছে। এবার আমাকেই মুখ খুলতে হবে। তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি তিনি নন বলে জানিয়েছেন।’