তালা অফিস থেকে নজরুল ইসলাম:
কপোতাক্ষ নদ খননের জন্য বরাদ্দকৃত ২৬১ কোটি টাকা লোপাট করে যেনতেনভাবে কপোতাক্ষ নদ খনন , পাউবোর বাঁধ নির্মানে সীমাহীন দূর্নীতির কারনে ঘন ঘন বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারনে সৃষ্ট বন্যায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা মৎস্য ঘের ভেসে যাওয়ায় পথে বসেছে তালা উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য চাষীরা। অধিকাংশ মৎস্য ঘেরের বেড়ী বাঁধ এখনও পর্যন্ত ৩/৪ ফুট পানির নীচে তলিয়ে আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি নিস্কাশনে নেট-পাটা অপসারনসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূরিকরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতি উন্নয়নে আরো বেশী সময় লাগবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তালা সদর, তেঁতুলিয়া, খলিশখালি, মাগুরা, নগরঘাটা ও খেশরা ইউনিয়ন। এসকল ইউনিয়নের প্রায় ১০২৭ টি মৎস্য ঘের পানির তোড়ে ভেসে গেছে। পাশাপাশি থাকা ঘের গুলো দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটি কার ঘের। অধিকাংশ মৎস্য ঘেরের বাঁধের উপর এখন ৩/৪ ফুট পানি। ভেসে যাওয়া ঘের সমূহের মালিকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় শতকোটি টাকা। সরকারি পর্যায়ে মৎস্য ঘের ব্যাবসায়ীদের পাশে না দাঁড়ালে অনেক ব্যাবসায়ী আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারবেনা বলে আশংকা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে,পলি দ্বারা ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কপোতাক্ষ অববাহিকায় কেশবপুর হয়ে মনিরামপুর পর্যন্ত প্রতিবছর সৃষ্ট বন্যায় বছরের অধিকাংশ সময় ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়ে বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষ। ২০০৯ সালের দিকে তৎকালিন সরকার বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষের জীবন ব্যাবস্থায় স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহন করে। বরাদ্দকরা হয় ২৬১ কোটি টাকা।
কিন্ত পরিতাপের বিষয় নিয়োককৃত ঠিকাদার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু প্রকৌশলী ও জনপ্রতিনিধিদের যৌথ প্রযোজনায় কপোতাক্ষ নদ খননে চলে দূর্নীতির মহোৎসব। কপোতাক্ষ নদ খননেন নামে সেময় নদের আকার-আকৃতি পরিবর্তন করে সরু খালে পরিনত করা হয়। দায়সারা গোছের খনন কার্যের ফলে কমিয়ে ফেলা হয় নদের গভীরতাও।
এ নিয়ে তৎকালিন সময়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি হলেও যশোর অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা নদ খননের ঠিকাদার হওয়ায় কোন প্রতিবাদই তখন হালে পানি পায়নি। ফলে তালা থেকে শুরু করে কেশবপুর ও মনিরামপুর অঞ্চলের কপোতাক্ষ অববাহিকায় বিস্তীর্ণ জনপদের লাখ লাখ মানুষের চোখে মুখে এখনও জলাবদ্ধতার ভয়ংকর চিত্র তাঁড়া করে ফিরছে।