নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১৬ ঘন্টা সেনা ক্যাম্পে থাকার পর নাছিম ফারুক খান মিঠুকে সদর থানা পোড়ানোর মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা ৬ টায় সেনা ক্যাম্প থেকে সদর থানায় আনার পর তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, শনিবার দিনগত রাত ১১ টার সময় লেঃ কর্ণেল আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য নিউ মার্কেটস্থ মিঠু খানের যৌথ বাসভবনে (ভাই-বোনদের) প্রবেশ করে। ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত মিঠু খানের অফিসে প্রবেশ করে নিজের পরিচয় দিয়ে লেঃ কর্ণেল আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ১৫/২০ জন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পরিচয় জেনে তাদেরকে চলে যেতে বলেন। এরপর মিঠু খানের ফ্লাটে চলে দীর্ঘ ২ ঘন্টার অভিযান। অভিযান শেষে লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র এবং গুলি নিয়ে যান। রাত ২ টার দিকে মিঠু খানকে শহরের সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে রবিবার সকাল ১০ টায় সেনা ক্যাম্পের লেঃ কর্ণেল আরিফুল ইসলামকে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠালে তিনি ফোন ব্যাক করে সাতনদীকে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, শক্ত কিছু এলিগেশন আছে মিঠু খানের বিরুদ্ধে। আছে কিছু মামলাও। তার এবং তার এ্যাসোসিয়েটসদের বিষয়ে খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে। সময় মত আপনাকে জানানো হবে।
নাছিম ফারুক খান মিঠুকে সদর থানা পোড়ানো মামলায় চালান দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ: এ দিকে সদর থানা পোড়ানো মামলায় জেল হাজতে প্রেরণের ঘটনায় সর্ব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এটি হাস্যকর এবং তামাশা মাত্র। সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নাছিম ফারুক খান মিঠু কোনভাবেই সদর থানা পোড়ানো সাথে জড়িত না এটি তার শত্রুরাও স্বীকার করবে বলে যোগ করেন তারা।
ষড়যন্ত্র থেমে নেই: আবারও নতুন ষড়যন্ত্র: সদর থানা পেড়ানো মামলায় চালান দেওয়ার পর নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নাছিম ফারুক খান মিঠুর নির্বাচনী প্রতিপক্ষ সহ একাধিক চক্র তার নামে চোরাচালানী মামলা, সোনা চোরচালানোর মামলা, অস্ত্র মামলা ও চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার জন্য ফন্দি ফিকির শুরু করেছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও তৎপর হয়ে উঠেছে। বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ভাইপো ভারতীয় ব্যবসায়ী বুলু চৌধুরির ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী জনৈক আজহারুল ইসলাম গতকাল রাতে নাছিম ফারুক খান মিঠুর বিরুদ্ধে থানায় এজাহার নিযে যান। ওই একই বিষয়ে আজহারুল ইসলাম আদালতে একটি মামলা করলে তা পিবিআইকে তদন্তের জন্য বলা হয় এবং বর্তমানে পিবিআই বিষয়টি তদন্ত করছে। এ বিষয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সাতনদীকে জানিয়েছেন, একটি বিষয়ে আদালতে মামলা হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় থানায় মামলা হয় না।
১৬ বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকা নাছিম ফারুক খান মিঠুকে গ্রেফতার নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন: দলীয় রাজনীতি থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর দূরে থাকা নাছিম ফারুক খান মিঠু ব্যবসায়ীদের নেতা। তিনি সাতক্ষীরা চেস্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি হিসাবে ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী সহ জেলার ব্যসায়ীদের যে কোন সমস্যায় পাশে থাকেন। তিনি দু’দুবার সাতক্ষীরা পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে সম্মানজনক ভোট পেয়েছেন। জেলা জুড়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, অভাবগ্রস্ত মানুষের ব্যায়বহুল চিকিৎসায় পাশে দাড়ানো তার অন্যতম সেবামূলক কাজ। তিনি বন্ধু বৎসল মানুষও বটে। সব দলের রাজনীতিক, আইনজীবী, বিভিন্ন প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক সহ সর্বসাধারণের সাথে তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলেন। তিনি বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে দেখা যায়নি তাকে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও বটে। ইছামতি সল্ট ইন্ড্রাষ্ট্রিজ, সিএন্ডএফ এজেন্ট সহ মাছের ফার্মও আছে তার। নাছিম ফারুক খান মিঠুর জনপ্রিয়তা বেশ ঈশ্বণীয়। এই জনপ্রিয়তার কারণে তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও বটে। তাকে গ্রেফতার করে সদর থানা পোড়ানোর মামলায় চালান দেওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই।