ইয়ারব হোসেন/আকরামুল ইসলাম: হাতে কাস্তে, মাথায় টোঁকা আর কোমরে গামছা নিয়ে পড়ন্ত বিকেলে ধান কাঁটতে মাঠে হাজির হলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস.এম মোস্তফা কামাল। চমকে গেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিছুক্ষণ পরেই ভুল ভাঙ্গলো স্থানীয়দের। জানলেন তিনি কৃষক নয় ধান কর্তন ও নবান্ন উৎসব উদ্বোধনের প্রধান অতিথি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের যবুরাজপুর এলাকায় মাঠে কৃষক সাজে ধান কেঁটে ধান কর্তন ও নবান্ন উৎসবের উদ্বোধন করেন জনবান্ধব এই জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তফা কামাল।
যবুরাজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নানের জমির ধান কেঁটে ধান কর্তন ও নবান্ন উৎসব উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, নবান্ন উৎসব কৃষকের প্রাণের উৎসব। আগে ঘরে ঘরে পালন করা হতো। সেই দিনে আবার ফিরে যেতে হবে। আর আর পায়েস ছিল লোভনীয় জিনিস। নবান্নের ধান দিয়ে আমার মা-চাচীর ঢেকি দিয়ে ধানের চাল মাড়িয়ে আটা তৈরী করতো। সেই আটা দিয়ে তৈরী হতো হরেক রকমের পিঠা পয়েস। যা ঘ্রাণ ছড়াতো চারপাশ। শুরু হতো নবান্ন উৎসব। সেই পিঠা উৎসব আগামীতে সাতক্ষীরায় উৎযাপন করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন আরও বলেন, ধান ক্রয়ে কোন প্রকার অনিয়ম হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে বিািভন্ন সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য। ফড়িয়া (ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী) বা বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে ধান ক্রয় করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের হয়রানি করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন কৃষক হয়রানির স্বীকার হলে তাৎক্ষণিক তার নিকট অভিযোগ দায়ের করার আহব্বান জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা খামারবাড়ির উপ পরিচালক অরবিন্দু বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ধান কর্তন ও নবান্ন উৎসব নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা খামার বাড়ির উপ সহকারি পরিচালক (শস্য) জসীম উদ্দীন, জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, জেলা কৃষক ক্লাবের সভাপতি ও জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষক ইয়ারব হোসেন।
সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট স্বজল মোল্লা, মো. নুরুল আমিন, জুবায়ের হোসেন, হিন্দ্রজিত সাহা, উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা চিরনময় সরকার, স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামসহ এলাকার কৃষক-কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।