অনলাইন ডেস্ক:
এমপিওভুক্তির চূড়ান্ত তালিকায় থাকা স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের এমপিওর জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে শনিবার (২ মে)। নতুন শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চারটি ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের যেকোন একটিতে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। যে উপজেলার পুরনো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওর চেক যে ব্যাংকে যায় সেই ব্যাংকের শাখায় হিসাব খুলতে হবে। নতুনদের এমপিওর টাকা ওই হিসাবে যাবে। হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক।
ঢাকা অঞ্চলের এমপিওর চেক যায় অগ্রণী ব্যাংকে। তাই ঢাকা অঞ্চলের নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অগ্রণী ব্যাংকে হিসাব খুলবেন। এ ক্ষেত্রে যারা পুরনো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। শিক্ষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সহযোগিতা করতে ব্যাংকগুলোর মহাব্যবস্থাপককে অনুরোধ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
এমপিওভুক্তির জন্য মোট ১ হাজার ৬৩৩টি স্কুল-কলেজ চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন। যদিও গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত প্রাথমিক তালিকায় ১ হাজার ৬৫১টি স্কুল-কলেজ স্থান পেয়েছিল। ৯টি নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, ৪টি মাধ্যমিক স্কুল, ১টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং ৪টি ডিগ্রি কলেজ চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
এমপিওভুক্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৪৮৩ কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ২৬৩টি বিএম কলেজ, ৬০টি কৃষি ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠান এবং ১৬০টি ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান। আর তালিকা থেকে ২০টি বিএম কলেজ, ১৭টি ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান ও ২টি কৃষি ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠান তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
৪৯৯ মাদ্রাসার মধ্যে ৩২৪টি দাখিল মাদ্রাসা, ১১৯টি আলিম মাদ্রাসা, ৩৪টি ফাযিল মাদ্রাসা ও ২২টি কামিল মাদ্রাসা চূড়ান্ত তালিকায় আছে। আর তালিকা থেকে ৩৪টি দাখিল মাদ্রাসা, ৯টি আলিম মাদ্রাসা, ৮টি ফাযিল মাদ্রাসা এবং ৭টি কামিল মাদ্রাসা চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছে।
২০১০ সালের পর দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ ছিল নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। এই সময়ে একাধিকবার কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষকরা। বেশির ভাগ সংসদ সদস্যও এমপিওভুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন জাতীয় সংসদে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত বছরের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। এরপর গত নভেম্বরে আরো সাতটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। করোনার মধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাপ্রাপ্তির সব পথ উন্মুক্ত হলো। আগামী ২ মে শনিবার থেকেই তাঁরা এমপিও পেতে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ছয় মাস ধরে নানা যাচাই-বাছাইয়ের কবলে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এই নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের হাহাকার আরো দীর্ঘ হচ্ছিল। অবশেষে সাধারণ ছুটির মধ্যেও কাজ অব্যাহত রেখে যাচাই-বাছাই শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক হাজার ৬৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে।