দেশের যে অভ‚তপ‚র্ব উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ তার দাবিদার- পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান
সময়ের সাথে পুলিশ ও জনতার এ দ‚রত্ব কমেছে- আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম
আহাদুর রহমান/ আব্দুর রশিদ: পুলিশিং কমিটির করার উদ্দেশ্য হলো সাধারন জনগনকে সাথে নিয়ে পাড়া মহল্লায় যদি কোন সমস্যা হয় তাহরে পুলিশিং কমিটির সদস্যরা বসে ওই সমস্যার সমাধান করে দেবে, যেন থানা বা কোর্টে না যেয়ে সহজে মিমাংসায় আসতে পারে সে জন্য। পুলিশিং কমিটি একটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি সাতক্ষীরার আয়োজনে এ উপলক্ষ্যে শনিবার বেলা ১১টায় শহরের আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে একটি বর্নাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিনের পর একই স্থানে এসে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন, সাতক্ষীরা সদর ০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি।
জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ডা.আলহাজ¦ আবুল কালাম বাবলার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপি এম বার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিতির বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি।
প্রধান অতিথি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমটি আরও বলেন, পুলিশের স্লোগান ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’। একসময় আমাদের দেশে পুলিশের সদস্য সংখ্যা অনেক কম ছিলো। ১৯৭১ সালে রাজারবাগে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা আক্রমন করে। সে সময় পুলিশের থ্রীনটথ্রী রাইফেল ছাড়া অন্য হাতিয়ার ছিলনা। তা দিয়েই পাকিস্তানি সৈনিকদের মোকাবেলা তারা করেছে। পুলিশের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। আল্লাহ প্রদত্ত নৌ বন্দর বাংলাদেশে ছিল দুটি। একটি চট্টগ্রাম অপরটি মংলা। তৃতীয়টি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর। সুসংবদ্ধ থেকে শেখ হাসিনার হাতকে আমরা শক্তিশালী করি তাহলে দেশ ভালভাবে চলবে। দ্রুতই আমরা উন্নত বিশ্বের কাতারে সামিল হব। উপস্থিত সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।
কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২১ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার প্রধান আলোচক এখন গনতান্ত্রিক পরিবেশে জন্মনেওয়া সন্তানেরা আমরা পুলিশে রয়েছি। এখনো যে সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের ভাবিয়ে তুলে সেই সেমব দায় কিন্তু আমাদের নিতে হবে। আমি গর্ব অনুভব করি আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য। যারা ১৯৭১ সালে অত্যাধুনিক অস্ত্র সজ্জিত গোলাবারুদ, ট্যাংকের বিরুদ্ধে মুক্তি যুদ্ধের স‚চনা করেছেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। আমি গর্ববোধ করি বিপথগামী সেনাদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা প্রতিহত করতে বুক পেতে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন এএসআই সিদ্দীকসহ পুলিশের সদস্যগন। আমি গর্ব বোধ করি ৯০’এর সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জনতার সাথে মিলে গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা স‚চনা করায় পুলিশের ভ‚মিকার কথা। দেশের প্রতিটি জেলায় যখন জঙ্গীদের আষ্ফালন হয়েছে তখন বাংলাদেশ পুলিশ কঠোর হাতে তা দমন করেছে। আজ স্থীতিশীল যে বাংলাদেশে আমরা বাস করি তা পুলিশের অবদান। দেশের যে অভ‚তপ‚র্ব উন্নয়ন হয়েছে আমি বাংলাদেশ পুলিশ তার দাবিদার। কারন দেশের আইন শৃংঙ্খলা শান্তিপ‚র্ণ ও স্বাভাবিক আছে বলেই দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রয়েছে এবং বাংলাদেশ পুলিশ সেটা অব্যাহত রাখবে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম কমিউনিটি পুলিশিং ডে’তে বলেন, পুলিশের প্রতি আগে সাধারন মানুষের একটি ভয় ছিল। দুঃষ্কৃতিকারী অন্যায়কারীদেরতো ভয় থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সাধারন মানুষও অনেক ভীতির মধ্যে থাকতো। কিন্তু সময়ের সাথে পুলিশ ও জনতার এ দ‚রত্ব কমেছে। বাংলাদেশ পুলিশ বাংলাদেশ সরকারের একটি সুসংগঠিত সংগঠন। পুলিশ মানুষের বন্ধু। আপনারা যে কোন সমস্যায় পুলিশের কাছে যাবেন। বর্তমান সরকারের পুলিশ বাহিনী ন্যায় নিরপেক্ষ। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম আছে। যে কারনে কমিনিটি পুলিশ বিশ্বের প্রতিটা দেশের ন্যায় আমাদের দেশে পরিচালিত হচ্ছে। আপনারা কোন কারনে থানায় না আসতে পারলে কমিনিটি পুলিশিং কমিটির সহায়তা নিতে পারেন।
পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের যদি সমন্বয় থাকে সে অঞ্চলে ভায়োলেন্স হয়না। পৌরসভায় আমার জানামতে কেউ আইনের বাইরে যেতে পারেনি। যখনই হোক অপরাধী ধরা পড়েছেই। তাই আপনাদের যে কোন অসুবিধায় কমিটি পুলিশিং এ যোগাযোগ করুন। ’
সমাপনি বক্তব্যে কমিউিনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব ডাঃ আবুল কালাম বাবলা তার বক্তব্যে বলেন, ‘মঞ্চে বক্তাদের বক্তব্য আমরা বুঝেছি। আমরা এ নিশ্চয়তা পেয়েছি মানুষ পুলিশের কাছে যেয়ে হয়রানির শিকার হবেনা। আমরা সেভাবেই চলব। আমাদের পাশের বাড়ির খোঁজ রাখব। যারা সামাজিক পরিস্থিতি অস্থীতিশীল করতে চায় তাদের খোঁজ খবরও আমরা রাখব। প্রয়োজনে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করব। আমাদের কমিউনিটি পুলিশিং ডে সফল হয়েছে। এজন্য জেলা পুলিশ, সদর থানা পুলিশ ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য এবং উপস্থিত অতিথীবৃন্দকে আমি ধন্যবাদ জানাই।
আলোচনা সভায় শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশ অফিসার ও শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যদ্বয়ের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সভায় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।