
দেবহাটা ব্যুরো: সাতক্ষীরার দেবহাটায় গভীর রাতে ধর্ষনের চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে গৃহবধুর স্বামীকে পিটিয়ে জখম করে পালানোর ঘটনা দফারফা করতে ছাত্রদল নেতা লম্পট ফারুক হোসেনকে শালিস বৈঠকে জুতাপেটা করা হয়েছে। লম্পট ফারুক হোসেন দেবহাটা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ গাজীর ছেলে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দেবহাটা থানা চত্বরে অনুষ্ঠিত শালিসের একপর্যায়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দফারফা করতে লম্পট ফারুককে তার চাচা ও দায়েরকৃত অভিযোগের ২নং আসামী দীন আলী গাজী উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গ ও জনতার সামনে জুতাপেটা করেন। এছাড়াও শালিসে মাত্র ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিনিময়ে ঘটনাটি দফারফার প্রস্তাব উত্থাপিত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে অমিমাংসিত অবস্থাতেই ভন্ডুল হয়ে যায় শালিস বৈঠকটি। সেসময় শালিসে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ, দেবহাটা থানার এসআই হেকমত আলী সহ ভিকটিম গৃহবধু ও তার স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শনিবার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের একতার সরদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা লম্পট ফারুক হোসেন সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। দায়েরকৃত অভিযোগ ও স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, ছাত্রদল নেতা লম্পট ফারুক হোসেন দীর্ঘদিন ধরে খেজুরবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন মানুষের ঘরে রাতের আধারে হানা দিয়ে আসছিলো। ইতোপুর্বেও একাধিকবার নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় ফারুককে নিয়ে গ্রাম্য শালিস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি লম্পট ফারুকের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় ওই এলাকার মানুষের। সম্প্রতি লম্পট ফারুককে ধরতে রাতের বেলাতেও ঘুম নষ্ট করে নিজেদের বাড়িতে পাহারা দিয়ে আসছিলো এলাকার অনেকেই। কিছুদিন যাবৎ খেজুরবাড়িয়ার সিরাজুল ইসলামের স্ত্রীকেও (২৮) কে উত্যক্ত করা সহ রাতের আধারে তাদের বাড়ীতে হানা দিতো লম্পট ফারুক। ঘটনাটি বুঝতে পেরে রীতিমতো প্রতিরাতেই লুকিয়ে পাহারা দিতে শুরু করে গৃহবধুর স্বামী সিরাজুল। শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে লম্পট ফারুক তাদের ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করলে গৃহবধুর স্বামী সিরাজুল তাকে জাপটে ধরে। একপর্যায়ে সিরাজুলকে বেদম পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় লম্পট ফারুক। এঘটনায় ভিকটিম গৃহবধুর স্বামী সিরাজুল বাদী হয়ে শনিবার লিখিত অভিযোগটি দায়ের করলে রবিবার দেবহাটা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ ও ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হেকমত আলীর উপস্থিতিতে দেবহাটা থানা চত্বরের একপাশে শালিস বৈঠক বসানো হয়। তবে শালিস বৈঠকে লোক দেখানো জুতাপেটা কিংবা নামমাত্র জরিমানা নয়, বরং দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী লম্পট ফারুকের শাস্তি দাবী করেছেন ভিকটিম গৃহবধু ও তার পরিবার।