
দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র মুলোক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে একটি স্বার্থন্বেসী মহল। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীন সেখানকার আশ্রায়ন-২ প্রকল্পে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থলোপাটের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য সম্বলিত খবর একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এ ছড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। মুলত নিজেদের স্বার্থ চারিতার্থ করতেই ইউএনও সাজিয়া আফরীনকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে স্বার্থন্বেসী চক্রটি। বর্তমানে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত সাজিয়া আফরীনের কাছে বৃহষ্পতিবার দুপুরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় তালা উপজেলাতে ৭৫২টি ঘর সরকারীভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। সেসময় তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেননা সাজিয়া আফরীন। তার যোগদানের আগেই এ প্রকল্পের অধীনে ঘর বরাদ্দের নামের তালিকা প্রনয়ন এবং টেন্ডারও দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত এসকল ঘরের নির্মানকাজ ৩০ জুন ২০১৮ এর মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা ছিলো। সাজিয়া আফরীন পহেলা জুলাই তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। অবশ্য তার যোগদানের আগেই আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সময়সীমা শেষ হলেও প্রকল্পটির কোন কাজই শুরু করেননি সংশ্লিষ্টরা। তালা উপজেলাতে সাজিয়া আফরীনের যোগদানের কয়েকমাস অতিবাহিত হওয়ার পর বাস্তবায়ন না হওয়া বৃহৎ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন তিনি। এসময় ঘর বরাদ্দের তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের স্বার্থে সাজিয়া আফরীন সহ খুলনা বিভাগব্যাপী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের টিনের বেড়া দেয়া ঘরের পরিবর্তে প্রত্যেককে সম্ভব হলে স্থায়ী ও সময়োপযোগী অধিক ব্যয়বহুল কংক্রিটের ঘর নির্মানের নির্দেশনা দেন বিভাগীয় কমিশনার। পরবর্তীতে আশ্রায়ন-২ প্রকল্প বাস্তবায়নে গৃহীত এ মহৎ উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে খুলনা বিভাগ জনপ্রশাসন পদকেও ভুষিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শুরুতেই তালিকা থেকে পাকা ঘর থাকা সামর্থবান ও একাধিক নাম থাকা ৮ জনকে বাদ দিয়ে সেই আটটি ঘর অন্যান্য দুস্থ্য ও অসহায় আট জনকে বরাদ্দ দেয়া হয়। যাদের মধ্যে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা জব্বার, শিল্পকলার অসহায় বাশিবাদক লিটন, মানসিক প্রতিবন্ধী হালিম, দিনমজুর নুরু, হাসমত ও এক বিধবা মহিলা সহ রয়েছেন আরো দুই অসহায় ব্যাক্তি। পরবর্তীতে উন্নতমানের ইট, বালূ, সিমেন্ট সহ অন্যান্য নির্মান সামগ্রী এবং আবুল খায়ের কোম্পানী থেকে সরকার নির্ধারিত ৩৬ মি:মি: পুরুত্বের টিন দিয়ে অধিক ব্যায়বহুল হওয়া স্বত্তেও সম্পুর্ন কংক্রিটের ঘর নির্মান করে দেয়া হয় তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের। পাশাপাশি প্রত্যেকটি ঘরে উন্নতমানের জানালা-দরজাও স্থাপন করে দেয়া হয়। এছাড়াও সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সুবিধাভোগীদের স্যানিটেশন ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু দু’এক জন সুবিধাভোগী তাদের পুর্বের স্যানিটারী ল্যাট্রিন থাকায় এবং নতুন ল্যাট্রিন স্থাপনের পর্যাপ্ত জমি না থাকায় প্রকল্পের দেয়া স্যানিটেশন সামগ্রী ব্যবহার না করে বাড়ীতেই রেখে দিয়েছেন। তবে সুবিধাভোগীরা ব্যবহার না করলেও প্রকল্প থেকে সকলকে নির্ধারিত স্যানিটেশন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। যেহেতু তার যোগদানের আগে দায়িত্বরত ইউএনও’র মাধ্যমেই প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের তালিকা প্রনয়ন সহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে সেহেতু সেখানে তার দুর্নীতি বা অর্থলোপাটের সুযোগ থাকার কথা নয়। পাশাপাশি যে নকশাতে তিনি কংক্রিটের ঘর নির্মান করেছেন সেই নকশার জন্য খুলনা বিভাগ জনপ্রশাসন পদকে ভুষিত হলো, আর পক্ষান্তরে সেই ঘর নির্মানের জন্য তার বিরুদ্ধে কেনো দুর্নীতির অপপ্রচার চালানো হচ্ছে গনমাধ্যমের কাছে এমন প্রশ্নও তুলে ধরেন নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন। তিনি আরো বলেন, স্বার্থন্বেসী একটি মহল সম্পুর্ন নিজেদের স্বার্থ চারিতার্থের জন্য ষড়যন্ত্র মুলোক ভাবে তার বিরুদ্ধে এধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত করে সুষ্ঠ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের জন্যও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি। এব্যাপারে তালা উপজেলার খলিসখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান বলেন, সাজিয়া আফরীন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীন অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেছেন। সকল সুবিধাভোগীদের চাহিদা ও মতামতের ভিত্তিতে টিনের বেড়া দেয়া ঘরের পরিবর্তে অধিক ব্যায়বহুল হওয়া স্বত্তেও কংক্রিটের ঘর নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সার্বক্ষনিক তদারকি সহ সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সার্বিক সহযোগীতাও করেছেন তিনি। তাছাড়া বৃহৎ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে তিল পরিমান দুর্নীতি করেননি সাজিয়া আফরীন। একটি স্বার্থন্বেসী মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই তার বিরুদ্ধে এধরনের ষড়যন্ত্র মুলোক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান।