লিটন ঘোষ বাপি: দেবহাটা উপজেলার টাউন শ্রীপুর স্বাস্থ্যকর গ্রাম যা আগে মানুষের শুধু ভাবনাতেই ছিল কিন্তু এখন তা বাস্তবে। সেখানকার নাগরিক সমাজ সংগঠনের প্রতিনিধিরাই এটার রূপকার। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের রাইট টু গ্রো প্রকল্প নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কাজ শুরু করলেও এখন তারাই এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের আলো দেখাচ্ছে একটি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে।
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ওয়ার্ল্ড ভিশন নেদারল্যান্ড থেকে আগত রাইট টু গ্রো প্রকল্পের প্রতিনিধি এনা লান্ডবর্গ এবং নোলান রোফেলসন স্বাস্থ্যকর গ্রামের সূচক পর্যবেক্ষণ শুরু করেন নাগরিক সমাজ সংগঠনের সদস্যদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে। তারা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান কিভাবে তারা এই স্বাস্থ্যকর গ্রাম কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেন এবং কিভাবে অর্জনগুলো চলমান রাখবে? উত্তরে তারা জানান যে, তাদের সংগঠন "টাউন শ্রীপুর সবুজ সংঘ" রাইট টু গ্রো প্রকল্পের নিকট হতে স্বাস্থ্যকর গ্রাম বাস্তবায়নের কৌশল এবং পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে তারা গ্রামের মানুষদের নিয়ে হাতে কলমে চর্চা করা শুরু করেন। তারা স্বাস্থ্যকর গ্রামের ৯টি সূচককে অনুসরণ করে তাদের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেন এবং তা বাস্তবায়িত হয় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঘোষণার মাধ্যমে। এখন তারা এই অর্জনগুলো টেকসই করনের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং এগুলি চলমান রাখতে আর্থিকসহ সব ধরনের সহযোগিতার জন্য স্থানীয় সরকার ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় স্থাপন করেছে।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মত বিনিময়ের পর এনা লান্ডবর্গ এবং নোলান রোফেলসন টাউন শ্রীপুর গ্রামে বিভিন্ন পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং নিরাপদ পানির সংস্থান, সেনেটারি, ল্যাট্রিন ও নির্দিষ্ট সময়ে হাত ধোয়ার উপকরণ এবং ব্যবস্থা আছে কিনা তারা তারা জানতে চান। পরিবার গুলির উত্তরে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পরিবারগুলি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ব্যবহার পরিবর্তনের জন্য নাগরিক সমাজের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে তারা নাগরিক সমাজের এ্যাডভোকেসির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত ঐ গ্রামের ২টি পানি শোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন যা গ্রামে ৩০০ এর অধিক পরিবারকে নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করছে এবং এই কাজের জন্য তারা স্থানীয় সরকার ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য যে উপজেলা প্রশাসন ইতিপূর্বে আরো ৮টি গ্রামকে স্বাস্থ্যকর গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেছে যা বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং তা টেকসই রাখার জন্য তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।