নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রীর গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠার সংবাদ বৃহস্পতিবার দৈনিক সাতনদী পত্রিকায় প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে দূর্নীতিতে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীরা। নিজেদের রক্ষায় নানা কলাকৌশল আর ফন্দি ফিকির আটতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে সাধারণ লেদ শ্রমিক আর মিস্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার দুঃসাহসিক ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫-০২-২১) দিনভর কলারোয়ায় এক শ^াসরুদ্ধকর ও কৌতুহলি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মৌসুমী জেরিন কান্তা তার এক নাইটগার্ডকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে পাঠায়। সেখানে যেয়ে উক্ত নাইটগার্ড ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে কিছু কথাবার্তা বলেন। ( কি বলেন তা জানা যায়নি, তবে .....) এরপর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল মিস্ত্রী সুভাষকে তার পরিষদে এসে দেখা করতে বলেন। সুভাষের যেতে দেরী হওয়ায় তার বাড়ীতে লোক পাঠিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় একই সময় লেদ মিস্ত্রী জাকিরকে সেখানে হাজির করা হয়। সেখানে চেয়ারম্যান তাকে নানা রকম ভয়-ভীতি দেখায়। সেখানে তাকে মারপিটও করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক পর্যায়ে সুভাষের কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়। এরপর চেয়ারম্যান ও তার লোকজন বেলা আনুমানিক ১২টার দিকে সুভাষকে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা’র কার্যালয়ে নিয়ে যায়। একই সময়ে লেদ ব্যবসায়ী জাকিরকে অনুরুপভাবে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে তাদেরকে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সহ অন্যান্য কিছু শেখানো কথা বলতে বাধ্য করা হয় এবং উক্ত কথা ভিডিও রেকর্ড করা হয়। সেখানে চেয়ারম্যান মনিরুল ও ইউএনও মিলে তাদের কাছ থেকে আবারও কয়েকটি সাদা কাগজে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন বলে অভিযোগ। পরে আহত মিস্ত্রী সুভাষকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে উক্ত সুভাষ ও জাকিরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও ভয়ভীতির কারনে তারা মুখ খুলতে সাহস করেনি। তবে একাধিক দায়িত্বশীল সুত্র উক্ত তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা তার জানা নেই। প্রয়োজনে সুভাষের কাছে জিজ্ঞাসা করার জন্য বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরিন কান্তা’র ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ দিকে রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত সুভাষ হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছে বলে জানা গেছে।