
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় দুর্যোগকালিন সময়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ১০ টায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিডো সাতক্ষীরা ও একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এফরটি প্রকল্পের আওতায় উপজেলা ডিজিটাল কর্ণারে এডভোকেসি সভায় সিডো সংস্থার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ।
সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.শাহিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা, ব্রক্ষরাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন ঢালি, মেডিকেল টেকনোলোজিষ্ট (ইপিআই) শেখ মহিবুর রহমান।
উপস্থিতি ছিলেন ব্রক্ষরাজপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, ব্রহ্মরাজপুর ও ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলকাস আলি, ওয়ান স্টপ ক্রাইসেস সেল (ওসিসি) সাতক্ষীরা সদর হাসপতাল আব্দুল হাই সিদ্দিকী। গাভা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ শিবপদ গাইন, জাতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঈমাম মাহবুবুর রহমান, মাছখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজান আলী, জিডিএফ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর সভানেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, নূনগোলা দাখিল মাদ্রাসা সুপার এবিএম হাফিজুর রহমান, ইউপি সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক ও যুব সদস্যববৃন্দ।
কার্যক্রমের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: তহিদ্জুজামান (তহিদ)।
আরো বক্তব্য প্রদান করেন প্রান্তিক যুব সংঘের সদস্য ইমতি জামিল, স্বপ্নচূড়া যুব সংঘের সদস্য হালিমা খাতুন ইয়ূথ এ্যালায়েন্সের সভাপতি মুশফিকুর রহমান, সাতক্ষীরা সাইবার ক্রাইম এলার্ট টিমের পরিচালক শেখ মাহবুবুল হক।
এডভোকেসির উদ্দেশ্য ছিল দুর্যোগকালিন সময়ে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরী করা। স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহন ও পরিসেবা নিশ্চিত করা। আশ্রয় ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয় করা এবং জরুরী পরিস্থিেিততে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা হ্রাস করা।
সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত যেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ ঘটছে। জলবায়ূ পরিবর্তন এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সিডোর, আইলা, আম্পান ইয়াস, রিমাল তার প্রত্যক্ষ উদাহরণ। এসব সমস্যা বাড়ায় কৃষি, মৎস্য, প্রাণী সম্পদ, অবকাঠামো, পানি পয়:নিস্কাসন স্বাস্থ্য খাত এবং লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা বিরুপভাবে প্রভাবিত হয়। এসব প্রতিক‚ল প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাওয়ে নেওয়ার মত সক্ষমতা বা দক্ষতা এখন ও গড়ে উঠেনি। জলবায়ূ পরিবর্তনের কারনে সাতক্ষীরা জেলায় জলবদ্ধতা, লবণাক্ততা, বন্যাসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে এলাকার মানুষ বিশেষ করে গ্রামীন নারীরা তারা বিভিন্ন ধরনের লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে।
এডভোকেসি সভায় তরূনদের চাহিদা উপস্থাপন করা হয়। সাইক্লোন শেল্টারটি নারী বান্ধব করা। ব্রেষ্ট ফিডিং/মাতৃদুদ্ধ কর্নারের ব্যবস্থা করা। গর্ভবতী মায়েদের সেবা ও চিকিৎসার জন্য নারী ডাক্টার নিশ্চিত করা। দুর্যোগকালীন সময়ে নারীদের জন্য হাইজিন কিডস ব্যবস্থা রাখা। কমিউনিটিভিক্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো এবং উন্নয়ন সংগঠন সমূহ দুর্যোগ কালীন সময়ে শেল্টার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে সমন্বয় রেখে আরো বেশি বেশি কাজ করা। সাইক্লোন শেল্টার ব্যবস্থাপনা কমিটিকে আর ও সক্রিয় হওয়া । আশ্রয় কেন্দ্রে দুর্যোগ কালীন সময়ে স্থানীয় যুবরা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ তৈরী করা। টয়লেটের পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষন, সাথে সাথে টয়লেট প্রতিবন্ধি, শিশু, গর্ভবতী ও বয়স্কদের ব্যবহারে উপযোগী করা। শেল্টার ব্যবস্থাপনা কমিটি (এস এম সি) সদস্যদের দুর্যোগ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করার সুযোগ আছে। শেল্টার ব্যবস্থাপনা কমিটিতে স্থানীয় যুবদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরী করা। আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ওয়াস ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, কেন্দ্রগুলো নারী বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা ও প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী নিশ্চিত করার সুযোগ আছে। দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগপরবর্তী কালীন সময়ে যাতে লিঙ্গ বা জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা না হয় তার জন্য বেশি বেশি করে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা যেতে পারে। দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগপরবর্তী কালীন সময়ে লিঙ্গ বা জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা নিরসনে যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে জোড়ালো ভূমিকা নিশ্চিত করার সুযোগ আছে।
সমগ্র অনুষ্ঠানিটি সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন যুব সদস্য সাকিব হাসান। উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেরিটর একশনএইড বাংলাদেশ সুমন আচার্য্য, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার, ফাইন্যান্স অফিসার চন্দন কুমার বৈদ্য।