আহাদুর রহমান জনি: শুরু থেকেই আছেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের সদস্য। ১৯৭১এ বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন সাতক্ষীরা জেলার পরিচিত মুখ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ খলিলুল্লাহ ঝড়ু। অসহযোগ আন্দোলনের মিছিলে চাপড়া লজ থেকে আতিয়ার ও মতিয়ার গুলি চালালে ঘটনাস্থলে নিহত হন আব্দুর রাজ্জাক। আরও একটি বুলেটে আঘাত করে খলিলুল্লাহর শরীরে। গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ওই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। ১৯৭৫এর ১৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের জয়েন্ট কনভেনর নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দায়িত্ব পালন করেন ছাত্রলীগের কনভেনর হিসেবে। ১৯৮০ থেকে সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহন করেন।
রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করলেও আপাদমস্তক এ ব্যবসায়ী ছেড়ে দেননি সমাজ সেবা। দেশের স্বাধীনতার চেতনা, সার্বভৌমত্ব ও মুজিবীয় আদর্শে বিশ্বাসী খলিলুল্লাহ ঝড়ু পূর্ণ আত্মনিয়োগ করেন জেলাবাসীর সেবায়। রাজনৈতিক বা জনপ্রতিনিধির দায়িত্বে না থেকেও সাতক্ষীরাবাসীর বিপদে সব সময় পাশে থেকেছেন। ২০০০ সালের বন্যায় ত্রান কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, ২০০১ সালে জামায়তের তান্ডব থেকে বাঁচাতে পাশে দাড়িয়েছিলেন ভিন্ন মতাবলম্বীদের পাশে। এখানেই থেমে যাননি। আইলা, আম্পান, সিডর সহ বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দূর্যোগে আর্তঃমানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জেলার উপকূলবাসীদের কাছে। খলিলুল্লাহ ঝড়ু সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সামাজিক সংগঠন সাতক্ষীরা জেলা সমিতি, ঢাকার। অন্যদিকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিঃ ও সাতক্ষীরা যুব একাডেমির। এছাড়াও জড়িত আছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে। তিনি এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে। নির্বাচনী গণসংযোগের ব্যস্ত সময়ের এক ফাঁকে সাতনদীর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হন মোঃ খলিলুল্লাহ ঝড়ু। আলাপচারিতার চুম্বক অংশ সাতনদী’র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন: দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছেন। সেবা করেছেন সাতক্ষীরাবাসীর। তাহলে জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন?
খলিলুল্লাহ: দীর্ঘ দিন ধরে সাতক্ষীরা বাসীর সেবা করেছি। পৌঁছে গিয়েছি সমাজের অবহেলিত মানুষদের কাছে। কাছ থেকেই দেখেছি তাদের সমস্যা। সম্ভাবনাও দেখেছি তাদের মধ্যে। ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাড়ানোর। কিন্তু তাদের জন্য এটা যথেষ্ট নয়। তাদের জন্য প্রয়োজন সুষম প্রশাসনিক সহায়তার। যা থেকে তারা বঞ্চিত। তাই এ সিদ্ধান্ত।
প্রশ্ন: চেয়ারম্যান হিসেবে জেলাবাসীকে কি দিতে চান?
খলিলুল্লাহ: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয় সাতক্ষীরা জেলায়। কিন্তু এটা নিয়ে কার্যত দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা জেলায় গৃহীত হচ্ছে না। লবনাক্ত আবহাওয়ার এ জেলায় সবচেয়ে অভাব সুপেয় পানির। জেলার চেয়াম্যান হতে পারলে চেষ্টা করবো ২২লক্ষ জনগনের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে। সম্পদের সুষ্ঠ বন্টনেও কাজ করবো। জেলায় অতীতের ন্যায় অসঙ্গতি ও পক্ষপাতমূলক প্রকল্পের বরাদ্দ না দিয়ে, উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান করবো। সর্বপরি জেলা পরিষদকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহীতামূলক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।