নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আর এই উন্নয়নশীল দেশের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা নিজেদের অফিসকে দুর্নীতির আখড়া হিসাবে পরিণত করেছে। সরকার এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপে নিয়েও একেবারে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না অদৃশ্য ক্ষমতার বলে এই সমস্ত কর্মকর্তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজ সরকারি অফিসগুলোর তালিকার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভূমি অফিস।
ভূমি অফিসগুলোতে দুর্নীতি ও হয়রানীর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। ঘুষ ছাড়া এসব অফিসে সেবা পাওয়া মুশকিল। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে সেবা প্রার্থীরা রীতিমতো অসহায়। এসকল দালালদের মাধ্যমে চুক্তি করে ঘুষ আদায় করে থাকে ভূমি কর্মকর্তারা।
ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করেছে কেউ, এমন খবর শোনাই যায় না। ভূমি অফিস থেকে সাধারণ জনগণ যে সেবা টুকু পায় তার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে পকেট থেকে খোসাতে হয় মোটা অংকের টাকা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে প্রকাশ্যে দুর্নীতি ও ঘুষ আদায় চলে ।
সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ ভূমি অফিসের ১০০ গজ দূরে অনির্বাণ ক্লাবের পাশে দিনের আলোয় তৈরি হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। অথচ মুন্সিগঞ্জ ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক তার অফিসে বসেই অন্যদের কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করছেন। সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা তার কাজ নয় অফিসে গেলে পকেট ভরা টাকা উনার কাজ এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীদের।
অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ সম্পর্কে ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক বলেন, ধর্মদাস দুইদিন আগে ঘর বাধা শুরু করেছে আমি অফিসে আসতে বলেছি কিন্তু সে আসেনি। মুন্সিগঞ্জ ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করেছে কেউ, এমন খবর শোনাই যায় না।
অভিযোগকারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে সত্যতাও পেয়েছেন। অভিযোগকারী বিশ্বজিৎ মন্ডল বলেন, মিউটিশনের জন্য চুক্তি হলো নয় হাজার টাকা কিন্তু পরবর্তী হোল্ডিং নাম্বার বসানোর জন্য আরো পাঁচশত টাকা দিতে হলো এটার দালালি না দুর্নীতি আমার বোধগম্য নয়।
অভিযোগকারী কলবাড়ি নেকজানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক সালাউদ্দিন আল গালিব জিকো বলেন, জমির খাজনা দিতে ১৭৫ টাকার পরিবর্তে আমার কাছে ১০০০ টাকা দাবি করা হয়। আমি অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে চারবার মুন্সিগঞ্জ থেকে হরিনগর যাওয়া-আসা করতে হয়েছে।
ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক ইতোপূর্বে দায়িত্বে অবহেলা করেছেন অনেকবার। আর এটা যে কী কারণে তা বুঝতে বাকি নেই মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষের। অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক ও স্থানীয় কিছু মিডিয়া কর্মীদের ম্যানেজ করে মিলে মিশে অফিসে বিছিয়ে রেখেছে দুর্নীতির জাল।
কেউ খাজনা বা অন্য ঝামেলা নিয়ে ভূমি অফিসে প্রবেশ করলে ভূমি কর্মকর্তা তাকে মিউটেশন, নামপত্তনসহ অন্যান্য অনেক কিছু করা লাগবে নানাবিধ সমস্যার কথা বলেন। আর পাশে থাকা দালাল চক্রটি চুক্তির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু হলেও অদৃশ্য ক্ষমতার বলে এই সমস্ত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল চক্রের মূলোৎপাটন করতে সরকারকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।