
# ছাত্রদল নেতা তুরান ও সাংবাদিক বেলাল হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড নজরুল ইসলাম
# ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আরেফিন তুরান হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার কাজীরহাট বাজারে কুশোডাংগা ইউনিয়ন ছাত্রদলের মানববন্ধন আয়োজন
# ছাত্রদল নেতা তুরান হত্যাকারী ৮নং কেরালকাতা ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম
# ছাত্রদল নেতা তুরান হত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার কলারোয়ার কাজীরহাট এলাকাবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আরেফিন তুরান এবং সাংবাদিক বেলাল হত্যাকাণ্ডের মূল মাস্টারমাইন্ড নজরুল ইসলাম ওরফে নজরুল চোর। তুরানকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাতকারী যূবদল নেতা মনিরুল ইসলাম কাজীরহাট বাজার কমিটির জবরদস্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুলের অত্যন্ত আস্থাভাজন। তুরানকে ইট দিয়ে আঘাতের পর এই নজরুল তার ফেসবুক আইডি থেকে মনিরুলকে ছবি ছেড়ে বাহবা দিয়েছিলেন। যেটির স্কিনশর্টও সবার কাছে কাছে। এদিকে, তুরান হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন করতে চাইলেও বাঁধা সৃষ্টি করে ঘাতকরা। তবে বাঁধা উপেক্ষা করে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল কাজীরহাট বাজারে মানববন্ধন করে। এছাড়াও এখনো পর্যন্ত তুরানের খুনীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি বিএনপিও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বৃহস্প্রতিবার বিকালে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে দ্রুত হত্যার মাস্টারমাইন্ড এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
এলাকাবাসীর মতে, কেরালকাতার ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুলের ইন্ধনদাতা কুশোডাংগা ইউপি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল। নজরুলের ইন্ধনে এবং পরিকল্পনায় তুরানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৬ সালে একইভাবে সাংবাদিক বেলালকে হত্যা করে কুশোডাংগা, হেলাতলা ও কেরালকাতা ইউপি বিএনপির কিছু নেতা এবং সহজ সরল ও নিরীহ লোকদের মামলার আসামী করেছিলেন নজরুল। ওই মামলাটি সাজিয়েছিলেন নজরুল নিজেই। নজরুলের অত্যাচারে অতীষ্ঠ স্থানীয় কাজীরহাটবাসী। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের আস্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বিপুল টাকা কামিয়েছেন নজরুল। বর্তমান নজরুলের মুল ব্যবসা চুরি-ছিনতাই আর ডাকাতি করা। রাজনৈতিক মদদে তিনি এসব করে যাচ্ছেন। প্রতি অপকর্মে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদব হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নাম ভাঙ্গান তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী কাজীরহাট বাজারটি কুশোডাংগা, হেলাতলা এবং কেরালকাতা ইউনিয়নের মিলনস্থল। পারিবারিকভাবে ধানঘোরার তুরানের বাবা কাজীরহাট বাজার কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা হামিদ সরদার এবং কাজীরহাট হাইস্কুলের নাইটগার্ড নজরুলের ভিতরে দীর্ঘদিনের কোন বিরোধ ছিলো। সেই বিরোধের সূত্রধরে ২০০৬ সালের সাংবাদিক বেলাল হত্যার তথাকথিত মামলায় হামিদ সরদারের নামে মামলা দায়ের করান নজরুল। সেই মিথ্যা মামলার বোঝা নিয়ে পরকালে পাড়ি দিয়েছেন হামিদ সরদার। ৫ আগস্টের পর কাজীরহাট বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে কেরালকাতা ইউপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল এবং নজরুল। সেই অনুযায়ী জোর করে জবরদস্তিভাবে জহুরুলকে সভাপতি এবং নজরুলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটিতে তুরানকে সহ-সাধারণ সম্পাদক রাখা হলে পদত্যাগ করেন। পরে তুরান পাল্টা কমিটি করেন। যে কমিটিতে তুরান ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। এরপর নজরুলের সাথে হামিদ সরদার থেকে বিরোধ চলে আসে তুরানের দিকে। জহুরুল আর নজরুলের ভীতরে বিরোধ থাকলে দখলদারিত্বের প্রশ্নে এই দুইজন এক হয়ে যান।
ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজার কমিটির দায়িত্ব নিয়েই নজরুল বেপরোয়া হয়ে উঠে। প্রথমেই দখল করে তুরানের দোকান। যুবদল নেতা মনিরুলকে দিয়ে তুরানের দোকান দখল করারা হয়। বিগত ৬ মাস কোন ভাড়া পরিশোধ করেনি, এই ভাড়ার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি তারপর ইট দিয়ে আঘাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিগত ১২ ফেব্রুয়ারি যখন তুরানকে মনিরুল ইট দিয়ে আঘাত করে তখন দূরে দাঁড়িয়ে ছিলো চোর নজরুল। প্রথমে একবার ইট দিয়ে মারলে কিছু না হলে পরে নজরুলের পরামর্শে পরপর তিনবার ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। নজরুলের এই নোংরামীর কারণে তুরানের মৃত্যু নিশ্চিত হয়।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, এই নজরুল ২০০৬ সালে কাজীরহাট বাজারের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তৎকালীন বাজারের মাঝখানে বিশাল অফিস বানিয়ে মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে অর্থ আদায় করতো। সেটির প্রধান প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ান তুরানের বাবা হামিদ সরদার। এজন্য তৎকালীন সাংবাদিক বেলালের ভাই আয়নাল মেম্বার আর নজরুল মেম্বার মিলে দিঘংয়ের বেলালের বিক্রি করা জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠে। ওই জমিটি নজরুলের অফিসের সাথেই ছিলো। জমিটি বিক্রি করা হয় রহিম সরদারের কাছে। পরে দখলে বাঁধা দেয়া হলে বেলালকে হত্যার পরিকল্পনা করে নজরুল আর আয়নাল। সেই মোতাবেক ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক বেলালকে হত্যা করে হামিদ সরদার, রহিম সরদারের ছেলে এবং আত্মীয় স্বজন এবং তিনটি ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের নামে মামলা সাজানো হয়। এই মামলটি সাজান নজরুল চোর। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করা হয় সরোয়ার দারোগাকে। পরবর্তীতে জমিটি দখল করে নেন নজরুল চোরের ঘনিষ্ঠজন বেলালের ভাই আয়নাল। এভাবেই বেলাল হত্যাকান্ড করা হলেও এখনো প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। বরং নিরীহ মানুষগুলো দিনের পর দিন হয়রানী করা হয়েছে।