নজরুল ইসলাম, তালা থেকে:
তালা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারী কলেজ রোড এর সিসি ঢালাইয়ে রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ এক মাস পার না হতেই উঠে যাচ্ছে পাথর।
সূত্রমতে জানা গেছে, তালা উপ-শহরের সদরে খেয়াঘাট মোড়(জেলা পরিষদ মার্কেট) এর পার্শ্ব হয়ে সরকারী কলেজ ও সরকারী স্কুল হয়ে প্রয়াত অধ্যক্ষ যোগেশ বাবুর বাড়ি অভিমুখ পর্যন্ত ১৬০ মিটার রাস্তার সিসি ঢালাই করা হয়। এই প্যাকেজ এর ৪৫ লক্ষ টাকা মধ্য সিসি ঢালাই এর জন্য এলজিইডি হতে বরাদ্দ কৃত ২৭ লাখ টাকা টেন্ডার আহব্বানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমা এন্টারপ্রাইজের প্রোঃ মোঃ হাসনাত আলী ও সাব ঠিকাদার আরাফাত এন্ড রুমা এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বধিকারী মোঃ নাজমুল হোসেনের কাজটি শেষ করেন। উক্ত সিসি ঢালাই কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করার ফলে রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার ১ মাসের মধ্য পাথরগুলো পায়ের ঘষায় উঠে যাচ্ছে।
তথ্য মতে,তালা সরকারী ভায়া রাস্তাটি সিসি ঢালাই কাজে ১২ মিলি রড দেওয়ার কথা থাকলেও শুরুতে ১০ মিলি ও শেষের দিকে সাড়ে চার মিলি কোথাও ৭-৮ মিলি আবার কোথাও ৬ মিলি রড দেওয়ার হয়েছে। এক বস্তা সিমেন্টের সাথে ৫ ফুট পাথর ও ৩ ফুট বালু মিশ্রণ করে ঢালাইয়ে কথার বিপরীতে এক বস্তা সিমেন্টের সাথে বালু পাথরের পরিমাণ তিন গুন বৃদ্ধি করে ঢালাই দেওয়া হয়েছে।এছাড়া দুই ধারে পাইলিং গাঁথুনি ৯" এর স্থলে ৮" থেকে শুরু করে মাঝখানে ৬" এবং সাড়ে ৪" দিয়ে শেষ করা হয়েছে।১৬০ মিটার ঢালাইয়ের মধ্যে ৪০ মিটার ঢালাই দিতে লাগলো দুই দিন ।বাকী ১২০ মিটার কাজ শেষ নামাতে লাগলো রাত বারোটার পর সকাল পর্যন্ত মাত্র কয়েক ঘণ্টা। উপজেলা সদরে সকল সরকারী দপ্তরের নাকের ডগায় এমন ফাঁকিবাজি টা হাস্যকর হলেও বাস্তবতার আলোকে এই রাস্তার ঢালাইয়ে শতভাগ দ‚র্নীতি অনিয়ম করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারী ২৩ এই রাস্তার সিসি ঢালাই কাজ শেষ হয়। তার ১ মাস না পার হতেই রাস্তার সিসি ঢালাইয়ের পাথর পায়ের ঘষায় উঠে যাচ্ছে । এমনকি চলতি মাসেই বড় বড় গর্তে পরিণত হবে এই রাস্তাটির। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ সহ উপজেলার সকল প্রশাসনিক ভবনের জানালা খুলতেই দেখা যাই এই রাস্তাটি তবুও এতবড় দ‚র্নীতি অনিয়ম চোখে পড়েনি কারও ? সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ চোখে কি রঙ্গিন কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল না কি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দারা প্রভাবিত হয়ে চোখ বুজে আছেন ? এমনটাই দাবী স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এই রাস্তার সাথে জড়িত তালার সব বড়বড় শক্তি শালী মহল কথা বললে বাজারে ব্যাবসা করতে পারবোনা।এই রাস্তা এ মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এখানে সবকিছু দুর্নীতি করা হয়েছে।সকলে টাকা খেয়ে বসে আছেন। রাস্তার এই করুন পরিণতি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ কালে ৭৫ বয়সী বৃদ্ধ বলেন, বাবা তোমরা চলে যাও তালায় বড় বড় নেতা আছে তারাই এই রাস্তা করেছে তোমার বিপদ আছে বেঁচে থাকতে পারবে না। তোমার এ সব নিউজ ফিউজ করার দরকার নেই।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার আরাফাত এন্ড রুমা এন্টারপ্রাইজ এর প্রোঃ মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, তালা সরকারী কলেজ ভায়া রাস্তাটির সিসি ঢালাই এর পরে যে সমস্যা ছিল তাহা পুটিং করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদক রাস্তার কাজ সমাপ্ত হওয়া মাস পোহাতে না পোহাতেই কিছু জায়গায় গর্ত ও পাথর উঠে গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান কেন পাথর উঠে গেছে তার জবাব উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার বলতে পারবে। আপনি প্রকৌশলী অফিসে যোগাযোগ করুন।
সিসি ঢালাই করা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমা এন্টারপ্রাইজ এর প্রোঃ হাসনাত আলী জানান, জনবহুল এই রাস্তা পাথর উঠে যায়নি। কোথাও কোন পুটিং করা হয়নি। আপনারা যদি কোন সমস্যা মনে করেন তাহলে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করুন উনি যেটা বলবেন সেটা সঠিক।
এবিষয়ে তালা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার রথিন্দ্র নাথ হালদার জানান, এখনো রাস্তার ফাইনাল বিল হয়নি। আমাদের রাস্তা পরিক্ষা করার মেশিন দিয়ে রাস্তা পরিক্ষা করা হবে তার পর গুনগত মান দেখে কোথাও সমস্যা থাকলে সেগুলো ঠিক করার পর ফাইনাল বিল দেওয়া হবে।