নজরুল ইসলাম, তালা থেকে:
গত বছরে ভুট্টা চাষে সফলতা পাওয়ায় এবছর ব্যাপকভাবে ভুট্টাচাষ শুরু করেছেন তালা উপজেলার ভুট্রা চাষীরা। তালা উপজেলার চারদিকে চোখ মেললেই সবুজের সমরোহ ভুট্রা গাছের এমন দৃশ্যে দেখে মন জুড়িয়ে আসছে। সব মিলিয়ে এ বছর ভুট্রার বাম্পার ফলন সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তালার ভুট্রা চাষিরা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর উপজেলায় ৬০হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। এবছর ও তালা উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও লক্ষ্যমাত্র অতিক্রম করে ৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া রহিমাবাদ,মাগুরা,ভারসা,শিবপুর গ্রামে ব্যাপক হারে ভুট্টা চাষ হযেছে। বাতালে দোল খাচ্ছে ভুট্রার পাতাগুলো। যা চোখে পড়ার মত ছিল। মনের আনন্দে ভুট্রা কৃষকরা ভুট্রা গাড়ের গোড়ায় কৃষকরা নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ, পানি সেচ, আগাছা পরিস্কার করছে। এছাড়া উপজেলার কৃষি অধিদপ্তরের কিছু প্রদর্শনী প্লট দেখা গেছে এসব এলাকায়।
তালা উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ভুট্রা চাষের লক্ষ্যমাত্র অতিক্রম করার জন্য। ফলে পাল্টে যাচ্ছে কৃষকের জীবন-জীবিকা ও চাষাবাদের পদ্ধতি। উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তালা অঞ্চলে ভুট্টাকে লক্ষ্য করে চাষাবাদে ব্যাপক সফলতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন উপজেলার কৃষি অফিস।
তালা উপজেলার ভারসা গ্রামের কৃষক মোঃ আমিনুর ইসলাম সহ একাধিক কৃষকরা জানান, অনান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ অনেক লাভজনক ফসল। বর্তমানে ভ‚ট্টা প্রতিমণ ৫৮০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবিঘায় লাভ হচ্ছে প্রায় ১৭ হাজার টাকা। অন্য ফসলের পাশাপাশি তারা ভুট্টা চাষ করেছেন এবং সফলতাও পাচ্ছেন চাষিরা।
বীজের হার ও বপন পদ্ধতি : বারি ভুট্টা জাতের জন্য হেক্টর প্রতি ২৫-৩০ কেজি এবং খই ভুট্টার জন্য ১৫-২০ কেজি হারে বীজ সারিতে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দ‚রত্ব হবে ৭৫ সেমি এবং সারিতে ২৫ সেমি দ‚রত্বে ১টি অথবা ৫০ সেমি দ‚রত্বে ২টি গাছ রাখতে হবে। রবি মৌসুমে অক্টোবর-নভেম্বর এবং খরিপ মৌসুমে মধ্য ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত সময় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ : আমাদের দেশে রবি মৌসুমে ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। ৪-৫টি গভীর চাষ ও ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। ভুট্টা চাষে বিভিন্ন প্রকার সারের পরিমাণ ,জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে জমির পরিমান অনুযায়অ ইউরিয়ার এক-তৃতীয়াংশ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে।এ সময় হেক্টর প্রতি জিংক সালফেট ১০-১৫ কেজি। এরপর কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ক্রমে সার,সেচ, রোগবালাই দমন ঔষধ দিতে হবে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, গত বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। তিনি আরো জানান তার অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকের মাঝে বিনাম‚ল্যে সার বীজ প্রদান করা হয়েছে। একাধিক ভুট্টা চাষের প্রদর্শনী প্লট আছে। কৃষকদের মাঝে আধুনিক টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে।