আকবর হোসেন,তালা: সাতক্ষীরা জেলার তালায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাংলী দেখিয়ে জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই আইন অমান্য করে অপরিপক্ব কাঁচা আম বিষাক্ত কার্বাইড স্প্রে করে কৃত্রিমভাবে পাকিয়ে বাজারজাত করার অভিয়োগ উঠেছে। প্রশাসনের সামনে দিয়ে এমন ঘটনা ঘটলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্চ্ছনা। ফলে একদিকে মহামারী করোনায় মানুষ অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছে, অন্যদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাড়তি লাভের আশায় বিষাক্ত ক্যামিকেল (কার্বাইড) দিয়ে পাকানো আম খেয়ে আরও অসুস্থ্য হওয়ার আশংখা রয়েছে।
তালা ইসলামকাটি, পাটকেলঘাটা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক অপরিপক্ব বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত আম ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালার এক আম ব্যবসায়ী বলেন, অত্র এলাকার অপরিপক্ব আম ঢাকার বাজারগুলোতে বৈশাখী আমের নামে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। রমজানে দেশব্যাপী পাকা আমের চাহিদা রয়েছে, এজন্য দামও বেশি। এছাড়া সাতক্ষীরার আমের সুখ্যাতি থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আগে ভাগে পাঠানো হচ্ছে।
তালা ইসলামকাটি ইউনিয়নে পরানপুর গ্রামের আম ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ বলেন, এবার ফলন কম হয়েছে। তাহাছাড়া জৈষ্ঠ্য মাস হলেও আম পাকছে না। এবার লোকসান গুনতে হবে। এছাড়া নাংলা গ্রামের রেজওয়ান শেখসহ একাধিক ব্যক্তি অপরিপক্ক আম বাসাতে পাকাচ্ছে বলে জানা যায়।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জেলায় আম চাষির সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০ জন। চলতি মৌসুমে জেলার ৫ হাজার ২৯৯ টি বাগানে ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে হিমসাগর ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, ন্যাংড়া ৫৬৪ হেক্টর, আম্রপালি ৮৯৯ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাকি জমিতে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, লতাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির আম রয়েছে। এ মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার মে. টন।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় ৭১৫ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ৪৭৫টি বাগানে ৭ হাজার ৭০ মে. টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে কেউ যদি অপরিপক্ব আমে কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাতকরণের চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তালা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা শুভ্রেশু শেখর দাশ বলেন, কেই আইন অমান্য করে নিদিষ্ট সময়ের আগে আম ভাংগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাথে নিয়ে মোবাইল কোট করা হবে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩১ মে থেকে হিমসাগর, ৭ জুন ন্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আম্রপালি আম পাড়া ও বাজারজাতকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে যদি কোনো বাগানের আম পরিপক্ব হয় তবে সেটি কৃষি কর্মকর্তাদের জানালে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, আমি শুনেছি। বিষয়টি আমি দেখব।