
আকবর হোসেন,তালা: সাতক্ষীরার তালায় টিআরএম প্রকল্পের যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনায় সর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার হাজারও মানুষ। সাড়ে ৪কিঃমিঃ জুড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। ভাঙ্গনকূল পরিদশন করেছেন জাতীয় সংসদ সদস্য এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর’র প্রকৌশলী সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, সাতক্ষীরার তালায় ২০১১-১২ অর্থ বছরে কপোতাক্ষ নদ খননের জন্য ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়। পাখিমারা বিলে প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির উপর টিআরএম প্রকল্প চালু হয়। ২০১১-২০২০ সাল পর্যন্ত টিআরএম প্রকল্প এর কার্যক্রম চললেও অধিগ্রহনকৃত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরন দেয়া হয় মাত্র ২ বছরের। বাকী ৮ বছরের টাকা না দিয়ে তালবাহানা করছে যশোর পনিউন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের বেশীরভাগ টাকা তছরুপ হওয়ার কারনে টিআরএম এর বেড়ীবাঁধ সঠিকভাবে করা হয়নি। বৃষ্টির মৌসুমে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ী, মাছের ঘের, ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। একদিকে ৮ বৎসরের টিআরএম এর টাকা হতে বঞ্চিত, অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনার ফলে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে এলাকার হাজারও মানুষ।
টিআরএম এর টাকার দাবিতে গত ২৬ মে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। টিআরএম এর বাধ পরিদর্শনের আগে ভুক্তভোগীদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের সভাপতিত্বে ও উপস্থানায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা-১(তালা-কলারোয়া) সংসদ সদস্য এড,মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ভুমি রবিউল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমান, তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী রাসেল, জেলা পরিষদ সদস্য সাংবাদিক মীর জাকির হোসেন,তালা সদর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আব্দুল জব্বার, সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক আকবর হোসেন, জালালপুর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম মুক্তি, জালালপুরের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম সহ জেলা পর্যায়ের অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্থানীয় চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সুশিল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মত বিনিময় সভায় খেশরা ইউপি মোঃ রাজিব হোসেন রাজু এবং জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম মুক্তি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যক্তিবর্গ আমাদের সাথে কখনও কোন যোগাযোগ করেন না। আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তারা আমাদের বাদ দিয়ে বালিয়ার মৃত জব্বার ডাক্তার এর পুত্র মধু নামের এক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেন। দু’জনে মিলে পরামর্শ করে কোন রকমে জোড়া তালি দিয়ে চলে যান। এতে লাভবান হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডর কর্মকর্তা এবং স্থানীয় মধু নামের ঐ ব্যক্তি। আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকার এবং সাধারন জনগন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, টিআরএম এলাকার মানুষগুলো খুবই সমাস্যার মধ্যে আছে। জমি থাকার পরেও তারা অনাহারে দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। বেড়িবাঁধ মেরামতসহ বাকী ৮ বৎসরের টাকা অতিদ্রুত প্রদানের জন্য সকলের নিকট অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেন, ২ কিস্তির টাকার পরে বাকী ৪ বছরের টাকার চাহিদা দেওয়া হয়েছে। অতিদ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সংসদ সদস্য এড, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি এই এলাকার মানুষ যাতে শান্তিতে থাকে। আমি বহুবার ডিসি সাহেব সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে একাধিক বার বসেছি। আশা করা যায় অতি দ্রুত এর সমাধান হবে।
মতবিনিময় সভার শেষে অতিথিরা টিআরএম এলাকা পরিদর্শনে যান। তারা সে সময় বেড়ীবাধ ভাঙ্গার দৃশ্য দেখতে পান এবং অতিদ্রুত বেড়ীবাধ মেরামত করার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।