আকবর হোসেন, তালা: প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান তান্ডবের ১৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে ইতোমধ্যে। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ সাতক্ষীরার তালায় টিআরএম প্রকল্পের বাঁধ মেরামত করা হয়নি আজও। ফলে জোয়ারে পানি বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত বাঁধ ভেঙ্গে মাধবখালীর খাল উপচে পানি প্রবেশ করে মসজিদ মন্দিরসহ এলাকার শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেঁসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও নিম্নাঞ্চল।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে আম্ফানে টিআরএম প্রকল্পের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বাঁধ সংস্কার ও জমির মালিকদের ক্ষতি পুরনের দাবিতে এক সমাবেশ ও মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ মে সকাল ১১ টায় তালা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত করা হয়।
মতবিনিময় শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো তাওহিদুর রহমান, তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সহকারী কমিশনার ভূমি রবিউল ইসলাম, তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত বাঁধটি সংস্কারে আশ্বাস দেন। আশ্বাসের ১৫দিন পার হলেও বাঁধ মেরামতের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানির চাপে প্রতিনিয়ত নতুন করে টিআরএম’র বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে স্থানীয় গুচ্ছগ্রামের ৪৫টি বাড়ি, মসজিদ, মন্দিরসহ এলাকার শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেঁসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও নিম্নাঞ্চল। পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়ির উঠোন, টিউবওয়েল ও টয়লেটসহ ফসলী জমি। ফলে সেখানকার মানুষগুলো চরম বিপদের মধ্যে দিনযাপন করছে। বাঁধটি দ্রুত মেরামত না করলে যে কোন সময় নতুন কওে আরও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিতহওয়ার আশংঙ্কা করছে মাদরা, দোহার, গলাভাঙ্গা এলাকাবাসী।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মামুন হোসেন, নিহার মন্ডল, গোলাম রাব্বানী, মিঠুন চক্রবর্ত্তীসহ অনেকেই বাঁধ জানান, কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পে টিআরএম এর বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ১৫দিন পার হলেও বাঁধ মেরামতের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে কপোতাক্ষের পানি মাধবখালী খাল উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে স্থানীয় গুচ্ছগ্রামের ৪৫টি বাড়িহ গলাভাঙ্গার ১টি মসজিদ, মাদরা গ্রামের একটি মন্দিরসহ শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
তারা আরও জানান, কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানির চাপে দুর্বল হয়ে যাওয়া টিআরএম’র বাঁধের অন্য অংশ যে কোনও সময় ভেঙ্গে যাওয়া আশংঙ্কা রয়েছে। ফলে আতংঙ্কর মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাই দ্রুত বাঁধ সংস্কার সহ জমির মালিকদের ক্ষতিপূরনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হ স্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, টিআরএম সমস্যা নিরসনে শীঘ্রই কাজ শুরুহবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য বাজেট অনুমোদন পেয়েছে। ডিসি স্যার পিআইসি গঠন করবেন। আশা করি কাজটি স্বচ্ছ ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হবে।
এ ব্যাপারে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম জানান, টিআরএম এলাকার বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে বাজেট অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। জমির মালিকদের ক্ষতিপূরনের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন,আমরা দ্রুত ব্যববস্থাা নেয়ার চেষ্টা করছি। করোনার কারনে লকডাউন পরিস্থিতি না হলে এতদিন ভূক্তভোগীরা ক্ষতি পূরন পেয়ে যেতেন।