কিশোর কুমার: ধর্ষণের অপমান সইতে না পরে আর্পিতা বাছাড় (৪৬) নামে এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে। সোমবার (১৪ আগষ্ট) বেলা ১১টার দিকে তালা উপজেলার কৈখালী এলাকা থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে ঘটনারপর থেকে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছেন অভিযুক্ত খালেক সরদার ও দবিড় মোড়ল। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তালা সহকারী পুলিশ সুপার সাজ্জাত হোসেন ও পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহামুদ হোসেন। নিহতের স্বামী পরিমল বাছাড় জানায়, একসময় প্রতারক চক্রের সাথে মিশে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বসেন তিনি। এরপর থেক স্থানীয়রা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করে কোন রকমে সংসার চলে তার। দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে অন্য মেয়ে পড়াশুনার জন্য বাইরে থাকে। বছর তিনেক আগে টাকার প্রয়োজনে ভিটামাটি টুকু স্থানীয়রা খালেক সরদারের কাছে ৫ লক্ষ টাকায় রেজিষ্ট্রি করে দেন তিন। এর পরে ওই বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া চুক্তিতে থাকতেন তিনি। গত বুধবার রাতে খালেক সরদার তার বাড়িতে এসে কুপ্রস্তাব দিলে তিনি মামলা করার প্রস্তুতি নেন তিনি। পরে খালেকের সহযোগী দবিড় মোড়ল নিবৃত্ত করেন তাকে। গত শনিবার তিনি বাড়িতে না থাকায় রাতে পুনরায় খালেক আসেন তার বাড়িতে আসেন। ওই সময় তার স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন খালেক সরদার। এতপর রবিবার রাতে খাওয়ার সময় স্ত্রী তাকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে রাতে ঘুম থেকে উঠে এক সময়ে স্ত্রীকে না পেয়ে চারিদিকে খোঁজাখুজি করতে থাকেন তিনি। পরে বাড়ির পাশে একটি পেয়ারা গাছে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। তিনি আরো বলেন, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করার মত মানুষ নয়। খালেক সরদার ও দবিড় মোড়ল তার স্ত্রীকে সুপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। এছাড়া স্ত্রী লাশ এক জায়গায় ও পরিহিত কাপড় পার্শবর্তী নদীর ধারে পাওয়া গিয়েছে। এঘটনায় তিনি বাদী হয়ে পাটকেলঘাটা থানায় খালেক সরদার ও দবিড় মোড়লের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা নুর হোসেন ময়না, ভৈরবী বাছাড় ও সাবেক যুবলীগ নেতা সুজিত হোড় সহ অনেকে জানান, খালেক সরদার এলাকার একজন চিহ্নিত সুদখোর। তার সুদের ফাঁদে পড়ে অনেক মানুষ নিঃশ্ব হয়ে গেছে ভারতে চলে গেছে। এছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুন্দরী স্ত্রীর প্রতি কুদৃষ্টি রয়েছে সবসময় তার। অর্পিতা বাছাড়কে দুদিন আগে সে জোর পূর্বক ধর্ষন করেছে। সেই অপমান সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারনা তাদের। স্থানীয় ইউপি সদস্য তপন বাছাড় জানান, খালেক প্রায় দিনে রাতে ওই বাড়িতে আসত আর টাকার জন্য চাপ দিত। আজ সকালে শুনি ওই শিক্ষকের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। এরপরে পরিমলকে নিয়ে থানায় যাই এরপর সেখানে সে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে খালেক সরদারের বাড়িতে গেলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওই সময় তার ভাইপো তন্ময় সরদার জানান,তার চাচা ওই জমি পাঁচলক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছে।পরিমল তার স্ত্রী ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকত। আজ শুনি পরিমলের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। এলাকার একটি কুচক্রী মহল তার চাচাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোয় চেষ্টা করেছে বলে দাবী করেন তিনি। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ হোসেন জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।