মসিউর রহমান ফিরোজ: সাতক্ষীরা তালা উপজেলায় রাজাপুর ইউনাইটেড বিল্ব রানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশের বিরুদ্ধে এসএসসি পরিক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে ফেসবুক পোস্টে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ওই শিক্ষক তার নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে ফল প্রকাশের কফি দিয়ে একটি পোস্ট করেন। ওই পোস্টে তিনি লেখেন যে “এত পাস কিভাবে সম্ভব?”। মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। যেটি সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড বলে দাবি করেন অভিভাবক ও সচেতন মহল। যেটা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে দাবি তাদের। এহেন আচরণে কয়েকজন কোমোনমতি শিক্ষার্থী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এবং ওই সময় শিক্ষার্থীরা দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এবং পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপে এবং উপযুক্ত বিচারের প্রতিশ্রুতিতে দিয়ে আন্দলোন মুখি কোমলমতি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের বাড়ি পাঠান। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের ফেসবুক আইডিতে ভুল স্বীকার করে ১আগস্ট ২০২৩ একটা প্রতিবাদ স্বরূপ বিবৃতি দেন। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। একাধিক সুত্র জানাই, অভিযুক্ত শিক্ষক রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ও প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় থেকে নিয়মিত স্কুল না করেই মাসের পর মাস বেতন তুলছেন। সম্প্রতি বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষায় প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। এতে তিনি ক্ষুদ্ধ হয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফল প্রকাশের কপি দিয়ে “এত পাস কিভাবে সম্ভব?” ফেসবুক পোস্ট করেন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ওই শিক্ষকের বহিষ্কারসহ শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। স্কুলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে প্রধান শিক্ষক আন্দোলন মুখি শিক্ষার্থীদেও সঠিক বিচারের প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে বিবৃতি দেন এবং তাদেরকে বাড়ি পাঠান। এদিকে ঘটনার পর থেকেই এখন বহাল তবিয়তে রয়েছে ওই স্কুল শিক্ষক। এ ব্যাপারে খেরশা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম লাল্টু বলেন, রাজাপুর স্কুলের শিক্ষক সুব্রত দাশ স্কুল বাদ দিয়ে রাজনীতি করে বেড়ায় বলে শুনেছি। কিছুদিন ধরে সে সরকারী দলের নাম ভাঙিয়ে জামায়ত বিএনপির দোশর হয়ে কাজ করে আসছে। এছাড়া সে নিজেকে কখনও সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। তার অপকর্মের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কাছে শাস্তির দাবী জানান। রাজাপুর ইউনাইটেড বিল্ব রানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, আন্দোলন মুখে ছাত্রছাত্রীদের শান্ত করতে আমি এই প্রতিবাদটা দিয়েছি। এ ধরনের পোস্ট দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন না এটা করা তার ঠিক হয়নি। তিনি আরো বলেন আমি অসুস্থ থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে ম্যানেজিং কমিটিকে জানিয়ে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার দাস মুঠো ফোনে শিক্ষামন্ত্রীকে সমালোচনা করে বলেন, আমাদেরকে অযোগ্য বলেছে, যে কারণে ইচ্ছাকৃত আমি এই পোস্টটি করেছি। এব্যাপারে আমি আপনার সাথে আর কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। তালা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানলাম তবে খোঁজ খবর নিয়ে উদ্যাতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিত কুমার সরকার বলেন, শিক্ষকরা শিক্ষা পরিপন্থি কোন কাজ বা কথা বলতে পারবে না । এ ধরনের শিক্ষকদের জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তিনি আরো বলেন কিছুু শিক্ষক আছে মাঝেমধ্যে এমন পরিস্থিতি সৃষ্ঠি করে। তার বিরুদে তদন্তপূর্বক সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান এই কর্মকর্ত।
তালায় এসএসসি পরিক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে ফেসবুকে শিক্ষকের রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টে, এলাকায় তোলপাড়
পূর্ববর্তী পোস্ট