নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ২২ শে জনুয়ারী রবিবার শ্যামনগর উপজেলার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিজ মিঞার বিরুদ্ধে একই উপজেলার ৭৯ নং অন্তাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পিয়ারী পারভীনের শীলতাহানীর অভিযোগের তদন্ত কার্য সম্পন্ন হয়। তদন্ত কার্য সম্পন্ন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত শাখার উপ-পরিচালক ড. নাছিমা খাতুন। তদন্ত কাজ শেষ। যথা নিয়মে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদন দাখিল করবেন। উক্ত ঘটনার প্রকৃত দোষীকে বিভাগীয় শাস্তির কিংবা দায় থেকে অব্যহতির প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করবেন পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য। কিন্তু তদন্ত সম্পন্নের ঘটনার পর থেকে রফিজ মিঞা বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত দূর্ণীতিবাজ শিক্ষকদের নিয়ে মূর্হমূহ মিটিং এবং সিটিং এ বসছেন। একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া গেছে, রফিজ মিঞা ঐসব নেতা শিক্ষকদের নিয়ে কখনও অফিসে আবার কখনও বাসায় বসে কৌশল বের করছেন।
জানা গেছে, লাঞ্চিতের শিকার শিক্ষক পিয়ারী পারভীনের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদনের মুল কপি লাপাত্তা হয়ে যায়। পরে ড. নাছিমা খাতুনের ঐকান্তিক চেষ্টায় অধিদপ্তরের আবেদনের রিসিভ কপি সংগ্রহ করে তার মাধ্যমে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করা হয়। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারের জন্য কোন সুখকর হবে না ভেবে তদন্তের খবর আবেদনকারী শিক্ষকের কাছে জানানো হয়নি। (কাজটি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের) এরপরও রফিজ মিঞা নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনাকে প্রভাবিত করতে ছুটি বিহীন শতাধিক শিক্ষককে হাজির করেন। রফিজ মিঞার ভাড়া করা শিক্ষকগণ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষে সাফাই গাইবেন সেটাই স্বাভাবিক। প্রকৃত ঘটনা শুধুমাত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞা এবং ঐ নারী শিক্ষকের মধ্যে ঘটেছিল। বিদ্যালয়ের কর্মঘন্টা নষ্টকরে শতাধিক শিক্ষকের দিনভর উপস্থিত থেকে শিক্ষা অফিসারকে বাচাঁনোর চেষ্ঠা করা, তাকে ফাসিয়ে দেওয়া নয়তো? শিক্ষা অফিসারের তদন্তে আসা কর্মকর্তা আরো একজন শিক্ষকের বিষয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময়ে জানতে চেয়েছিলেন আর তিনি হলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিজ মিয়ার সকাল ও বিকালের সফর সঙ্গী ৯১ নং খ্যাগড়াদানা স.প্রা.বি এর প্রধান শিক্ষক আব্দুল্যাহ আল-মামুনের সম্পর্কে। অতি ঠান্ডা মেজাজের এই শিক্ষক নেতার বিষয়টি ( দুজনের ডাকনাম মামুন হওয়ায়) ঘুরিয়ে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদকে অভিযুক্ত করে যে আমল নামা তৈরী করেছেন সেটির তীর আব্দুল্যাহ আল-মামুনের দিকে যাচ্ছে নাতো?
তদন্তের দিন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে রফিজ মিঞার আবেদন কারী শিক্ষকের সাথে এসেছেন তার শিশু ও স্বামী। রফিজ মিঞার পক্ষে এসেছেন শিক্ষক নেতা সহ শতাধিক শিক্ষক। নারী কেলেঙ্কারীর তদন্ত অনুষ্ঠানে এত জনাধিক্য বিষয়টি বড়ই লজ্জাকর। শতাধিক শিক্ষক রফিজ মিঞাকে বাঁচাতে মরিয়া। উপজেলায় রফিজ মিঞা আসার পর কোন অনিয়ম, দূর্ণীতি হয়নি এমন সাক্ষ্যদাতারা শিক্ষা অফিসের অডিট ঠেকাতে বিদ্যালয় প্রতি ৩০০ টাকা হারে ভাউচার বিহীন চাঁদা দিলেন, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্ণামেন্ট বাবদ ৩০০ টাকা হারে এবং বিদ্যালয় সমূহের বিভিন্ন বরাদ্ধের টাকার চেক পাইতে আনুপাতিক রেশিও নির্ধারিত ঘুষ, সর্বশেষ ¯িøপের অর্থে স্মার্ট টিভি ক্রয় বাণিজ্যে সক্রিয় থাকার শতাধিক প্রমাণ ঢাকবেন কিভাবে? এ সকল সাক্ষ্যদাতাদের নিয়ে নতুন কৌশলে হাটছেন রফিজ মিঞা।
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষকের পারিবারিক ও বিদ্যালয় কেন্দ্রিক (প্রকৃত তথ্য আড়াল করে) তথ্য প্রদান করে সংবাদ সাজিয়ে শিক্ষা অফিসারের যে মতামত প্রকাশিত হচ্ছে তাতে বিষয়টি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা নাকি অন্য কোন দূরভিসন্ধি? এমনটিই মনে করছেন উপজেলার সাধারণ শিক্ষকগণ। কিছু দালাল শিক্ষকের চক্রান্তে ন্যায় বিচার ভুলুন্ঠিত হতে পারে এমন আশংকাও করছেন কেউ কেউ। ভুক্তভোগী নারী শিক্ষকের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আবেদন লাপাত্তা হলে প্রতিকারের জন্য ঐ নারী শিক্ষক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্যামনগর, চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, শ্যামনগর ও মাননীয় জাতীয় সংসদ, সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর, কালিগঞ্জ আংশিক) মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছিলেন।