
হাবিবুর রহমান: তালায় আলোচিত জমি জবর দখলকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের চিত্রপট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে ভূমিদস্যু সিরাজুল ও তার পেটুয়া বাহিনীরা। তঞ্চকী দলিল ও মিউটেশান সৃষ্টি করে গোপনে জমিটি বেদখলের নীলনকশা রচিত করছে তালার আলোচিত-সমালোচিত এ ভূমিদস্যু বাহিনী।
তালায় আলোচিত তালা মৌজার এসএ১৪৩ খতিয়ানের সাবেক ২৭৭, হাল দাগ ২০৫১ আরএস খতিয়ান ২০৬৫, ডিপি খতিয়ান ২একর ৯৩.৭৫ শতক এসএ মালিক হাবিল শেখ, কাদের শেখ, আকিমুদ্দিন শেখ, তিনভাইর নামে সমান অংশে রেকর্ড হয়। পারিবারিক আপোষ সুত্রে আলোচিত সম্পত্তি একক ভাবে আকিমুদ্দিন শেখ, পিতা লষ্কর শেখ, সাং-মোবারকপুর একক ভাবে ভোগদখল করেন। ভিন্ন মৌজায় ভিন্ন খতিয়ানে হাবিল শেখ ও কাদের শেখ সমপরিমান জমি ভিন্ন খতিয়ানে ভোগদখল করে। ৯০ জরীপে হাবিল শেখ ও কাবিল শেখের ওয়ারেশগন একক ভাবে রেকর্ড করলেও আকিমুদ্দিন বাধা প্রদান করেনি। আলোচিত খতিয়ানে এস,এ রেকর্ড অনুযায়ী ওয়ারেশগনের নাম বসায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। কিন্তু মাঠজরীপের আমিন ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে খতিয়ানের ৯ কলামে অত্র দাগে আবুল কাশেম শেখ পিতা হাবিল শেখ গংদের দখলনাই উল্লেখ করেন। আলোচিত সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ তৈরি হলে তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদের আকিমুদ্দির ওয়ারেশগন ৩৪/১৪ নং একটি মামলা দায়র করে (গ্রাম আদালতে)। উক্ত মামলাটি দীর্ঘদিন উভয় পক্ষকেক নিয়ে বসাবসির পর কাদের শেখের পুত্র আলহাজ্ব সিরাজ শেখে প্রকাশ গ্রাম আদালতে তিনি স্বীকার করেন আমার ছোট চাচা আজবুজ প্রকৃতির লোক হওয়ায় বড় চাচা হাবিল শেখ এবং পিতা আকিমুদ্দির নামে একটি দলিল করে দিয়েছে যা আমি খুঁজে পাচ্ছিনা বলে জানান। পরবর্তীতে তিনি দলিলটি উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে জমা দেয়। তাতে দেখা যায়, দলিল নং ১২০৬,তারিখ ২৫/০৪/১৯৬৮ খ্রিঃ ইসলামকাটি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রি হয়। এরপর বিষয়টি মিমাংসা হয়। পরবর্তীতে আবুল কাশেমের সাথে আকিমুদ্দিনের পরিবারের বিরোধ তৈরি হলে মিমাংসার নামে ১। মেহেন্দি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মোড়ল, ২। বারুইআটির গোলজার সরদার, মশিয়ার সরদার, পিং- নূর আলি সরদার, ৩। শফিকুল ইসলাম সরদার পিং মোসলেম সরদার, ৪। আকবার গাজী, পিং- মৃত জব্বার গাজী, ৫।মোঃ সিরাজুল ইসলাম পিং- মৃত মোবারক আলি সাং মাছিয়ারা ১৫ শতক জমি নিঃস্বত্ত্ববান ও দখলবিহীন আবুল কাশেম শেখ সহ তার ওয়ারেশদের কাছ থেকে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে রেজিঃ করে ৩০ ধারায় রেকর্ড করার জন্য আপত্তি মামলা করে। অন্যদিকে আকিমুদ্দিন শেখের ওয়ারেশরা একক মালিকানা প্রাপ্তির জন্য ৩০ ধারায় মামলা করে। দো-তরফা শুনানীতে গোলজার গংদের নিঃস্বত্ত্ববান দখলবিহীন ব্যক্তিদের নিকট থেকে জমি ক্রয় করে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে আপত্তি মামলা দায়ের করায় আপত্তি মামলা নামঞ্জুর হয়।
অপর দিকে আকিমুদ্দিনের নামে একক ভাবে রেকর্ড প্রাপ্তির দাবি শুনানী অন্তে আদেশ হয় যে আকিমুদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ৪পুত্র ও ১ কন্যা থাকে। আপত্তি মামলাটি দায়ের করে ৪ পুত্র। এসএ রেকর্ডের পূর্বে হতে আকিমুদ্দিন একক ভাবে এই খতিয়ানে ভোগ দখল করে। তালা সদর ইউনিয়নের ৩৪/১৪ মামলায় আকিমুদ্দিনের নামে দানপত্র করে দেন এসএ প্রজা হাবিল শেখ ও কাদের শেখ। সে কারণে একক ভাবে মালিকানা পাওয়ার হকদার আকিমুদ্দিনের ওয়ারেশগন। কিন্তু আকিমুদ্দিনের ৪পুত্র আপত্তি মামলা দায়ের করায় কন্যা বাদী শ্রেণীভুক্ত না থাকায় দাবিটি না মঞ্জুর করা হইলো। তবে দীর্ঘ ৬০-৭০ বছর আকিমুদ্দিন তার ওয়ারেশ গনের একক দখল থাকায় জরীপের ৯ কলামে দখল নোট কর্তত হয়ে ৩৫ ডিপির ২০৬৫ খতিয়ানের ৯নং কলামের দখল নোট কর্তন হয়ে ১ কলামে ১নং ক্রমিকে আকিমুদ্দিন শেখ পিতা লষ্কর শেখ, সাং- মোবারকপুর নামের নিচে গ্রুপ লাইন টাকা হয়। এবং ৯নং ক্রমিকে নামের নিচে অত্র খতিয়ানে আবুল কাশেম শেখ গংদের দখল নাই রায় হয় ২৩/০৬/২০১৫ তারিখে। জরীপের ৩১ ধারায় উভয়পক্ষ আপিল করে। আপিল শুনানী অন্তে আকিমুদ্দিন ৩০ ধারায় রায় বহাল থাকে। কিন্তু গোলজার গংদের ওই ৬ জনের নাম অর্ন্তভূক্ত হলেও আকিমুদ্দিনের নামের নিচে গ্রুপ লাইন ও অত্র খতিয়ানের আবুল কাশেম শেখগংদের দখল নাই রায় বহাল থাকে। আকিমুদ্দিন গং ভূমি জরীপ অধিদপ্তরে আপিল করে যা চলমান আছে। আকিমুদ্দিনের ওয়ারেশগন তালা সহকারি জজ আদালতে ৫৮/১৪ নং বাটোয়ারা মামলা এবং ১/২২ স্যুট ফর ইনজাংশন মামলা দায়ের করে উল্লেখিত গোলজার গং সহ ১৫ জনের নামে। নিষেধাজ্ঞার মামলায় নিষেধাজ্ঞা আদেশ না পাওয়ায় দায়রা জজ আদালতে মিস আপিল ১৫/২২ দায়ের করা হয়। যার শুনানীর জন্য যগ্ম জেলা জজ ২ নং আদালতে অপেক্ষমান আছে।
উক্ত সম্পত্তি রেষ্ট্রি ও নামপত্তন হওয়ার কথা না। কিন্তু ৩৫ ডিপির ২০৩৫ খতিয়ানের সাবেক ২৭৭, হাল ২০৫১ দাগের খতিয়ান পর্চাটি জাল তৈরি করে গোলজার গং সহ ৩০-৩২ জনকে এই জমি হস্তান্তর করে তঞ্চকী দলিল তৈরি করে তঞ্চকী মিউটেশান সৃষ্টি করে। এই মিউটেশান বাতিলের জন্য সহকারি কমিশনার ভূমি আদালতে মিস মোকদ্দমা নং ৪৫(২০২১-২২) বাদী লিয়াকত দিং বিবাদী আবুল কাশে দিংদের মামলা শুনানীর অপেক্ষায় আছে। হালি শেখের ওয়ারেশগন ১। জাকির শেখ, ২। মোছা শামসুন্নাহার, জং- ফারুক হোসেন শেখ, ৩। জিয়ারুল হোসেন শেখ ওরফে ইকবাল শেখ ২৮/০৭/২০২২ খ্রিঃ তারিখে লিখিত জবাব দাখিল করেন যে আমার দাদা হাবিল শেখ ও মেঝ দাদা কাদের শেখ ছোট দাদা আকিমুদ্দিনের নামে দানপত্র করেছে এবং এজমালিতে ভিন্ন খতিয়ানে আমরা এবং আমাদের মেঝ দাদার ওয়ারেশরা দখলীকার আছি। এই খতিয়ানে আমাদের কোন দাবী নেই। এই মিউটেশান বাতিল হলে আমাদের কোন আপত্তি নাই।
ভূমি দস্যুরা উক্ত জমি দখল করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করছে। এ গ্রুপে সিরাজুলের নেতৃত্বে গোলজার সহ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, সাবেক চরমপন্থী সদস্য সহ বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি দপ্তরের স্থানীয় কর্মচারীও আছে।