এনামুল বাসার টিটো, ডুমুরিয়া থেকে: ডুমুরিয়ার রুদাঘরা ইউনিয়নে হতদরিদ্রর ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে কাবিটা প্রকল্পের কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পের ১১৯ জন শ্রমিকের মধ্যে ৯ ওয়ার্ডে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৭ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকছেন। কাজ না করেও দু’দিনের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সরেজমিন যেয়ে এবং একাধিক দায়িত্বশীল সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডুমুরিয়ার রুদাঘরা ইউনিয়ন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন (৪০ দিন) কর্মসূচীর আওতায় চলতি অর্থ বছরে ১১৯ জন শ্রমিক রয়েছেন। প্রতি শ্রমিক দিনে ৪’শ টাকা করে মোট ১৬ হাজার টাকা পাবেন। একাধিক প্রকল্পে ৯ ওয়ার্ডে মাত্র ৩ জনকে প্রকল্প চেয়ারম্যান করা হয়েছে। ১১৯ শ্রমিকের মধ্যো ২৭ শ্রমিক কাজে আসেনা এমন চিত্র সরেজমিন যেয়ে দেখা গেছে। ফলে সরকারের ২৭ শ্রমিকের পারিশ্রমিক ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা গচ্চা যাচ্ছে। ১,২ ও ৩ ওয়ার্ডে মাট ৩৯ জন শ্রমিক রয়েছে। সরজমিন ১ নম্বর ওয়ার্ডে যেয়ে দেখা যায় ১০ জন শ্রমিক কর্মরত। কর্মরতরা হচ্ছেন রিনা বেগম, লিমা বেগম, শাকুরা বেগম, বিজলী রানী, জবেদা বেগম, হামিদা বেগম, কহিনুর বেগম, মুসলিমা বেগম, সাকিব হাসান ও শরিফা। ২ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ১১ জন হলেন, সাধন গাইন, আব্দুর রহিম, আব্দুল লতিফ, সানু, মনমাতন গাইন, জিতু গাজী, সাবিত্রী রানি, আরতি মন্ডল, রিজিয়া বেগম, খুকু মনি ও নুরজাহান বেগম। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ১১ জন হলেন, মনিমোহন মন্ডল, বনমালী, আমেনা বেগম, রোকেয়া বেগম, আলেয়া বেগম, আম্বিয়া বেগম, জবেদা বেগম, রঞ্জিদা বেগম, আছোরা বেগম, পরিমল দাস ও তাপসী পাল। মোট ৭ জন অনুপস্থিত এ তিন ওয়ার্ডে। ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ জন শ্রমিকের মধ্যো ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ৬ জন হলেন, শিফালী, শিমুল, লিপিকা, গফ্ফার, প্রভাতী ও শান্তিলতা। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ১১ জন হলেন, হযরত শেখ, রেবেকা বেগম, লক্ষী রানী, সরস্বতী রানী, রুবিনা বেগম, রোক্সনা বেগম, আনারুল, রওশন, ভোলানাথ, রাবেয়া ও রুমা। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ১১ জন হলেন, ডলি বেগম, মুর্শিদা বেগম, রোকেয়া বেগম, আনায়ারা বেগম, রোজিনা বেগম, সুফিয়া বেগম, বন্ধনা রানী, বানী দাস, মহিলা মেম্বরর স্বামী রেজাউল ইসলাম, রফিক, মনিরুল ও তৌহিদ। এ ৩ ওয়ার্ডে ১২ জন অনুপস্থিত। ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ জন শ্রমিকের মধ্যো ৮ জন অনুপস্থিত। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ৮ জন হচ্ছেন, রাজ্জাক, রোস্তম আলী, হাসেম, জামির হোসেন, রশিদা বেগম, মনোয়ারা বেগম, হামিদা বেগম ও শান্তি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ১৫ জন হলেন হাসেম সরদার, আবুল হোসেন, মান্নান, ফরহাদ, বাহারুল, মজিদ, কামরুল, আল আমিন, বিউটি, রেহেনা, রিজিয়া, রিনা, লাইলি, শাহিনুর ও ভানুয়ারা । ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ৯ জন হলেন, শামীম গাজী, ইছহাক মাড়ল, মনিরুল মোল্লা, সেলিম শেখ, মিজানুর রহমান, শোভা রানী, মর্জিনা বেগম, রানু বেগম ও সাথী।
রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ বলেন, প্রচন্ড শীতের কারনে কাজের গতি কম, তবে শ্রমিক উপস্থিতি ঠিক আছে।
তবে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে যেয়ে দেখা যায় ৪০ দিনর ৯ জন শ্রমিক হাসানপুর আবাসনের পাশে ৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকার কাবিটা প্রকল্পের রাস্তায় কাজ করছেন। শ্রমিকদের কাছে সেখানে কাজ করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ইউপি মেম্বর রফিকুল ইসলাম সাহেব আমাদের এখানে কাজ করতে বলেছেন।
ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, কাবিটা প্রকল্পের চেয়ারম্যান আমি। ৪০ দিনের শ্রমিক দিয়ে ওই প্রকল্পে ঘাস লাগানা ও অন্যান্য কাজ করানো হচ্ছে। এদিকে এ ইউনিয়নে ১ দিন পর কাজ শুরু করা হয়েছে এবং বড় দিন কোন কাজ করানো হয়নি শ্রমিকদের দিয়ে। এ দু’দিনের টাকা উত্তালনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, শ্রমিক কম আছে কিনা আমার জানা নেই। প্রকল্পটি দেখভাল করেন ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমেদ। শ্রমিক কম হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৪০ দিনের শ্রমিক দিয়ে কাবিটা প্রকল্প কাজ করানো হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এমনটি হওয়ার কথা না। যদি এ ঘটনা সত্য হয় অবশ্যই প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।