
আতিয়ার রহমান, মণিরামপুর, যশোর থেকে: করোনা টিকায় ধীরে ধীরে আগ্রহ বেড়েছে মণিরামপুরবাসীর। যতই দিন যাচ্ছে ততই বুথে ভিড় বাড়ছে। টিকা নিতে পেরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উচ্ছ্বসিত। গত ১২ জুলাই ৭৮জনকে করোনা টিকাদানের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর উপজেলা মণিরামপুর। ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক বিভিন্ন পেশার মানুষের বসবাস। বর্তমান সেখানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। করোনা শনাক্তের সংখ্যাও কমেছে অনেক। একমাস আগেও যেখানে ঘরে ঘরে জ্বরের রোগীর খোঁজ মিলতো, এখন তেমন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেও ভিড় দেখা যাচ্ছে না জ্বরের রোগীদের। গত সপ্তাহে গড়ে ২০-৩০জন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, যা অনেকটাই স্বাভাবিক সময়ের মতো বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
তবে টিকা গ্রহণে প্রথমদিকে অনীহা থাকলেও এখন সচেতন হয়েছেন গ্রাম-গঞ্জের মানুষ। তারা নিবন্ধন করে অনেকে টিকা নিচ্ছেন। রোববার দুপুর পর্যন্ত ৫হাজার ৯১জন নারী-পুরুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকা নিতে আসছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮’শ ৩৭জন, সুস্থ্য হয়েছেন ৭’শ ৩৭জন, বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮২জন ও হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭জন চিকিৎসাধীন আছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। টিকে নিতে আসা পৌরশহরের তাহেরপুর গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, করোনার টিকা নিয়ে গুজবে ভয় পেয়েছিলাম। এই জন্য প্রথমে টিকা নিতি সাহস পাইনি। কিন্তু দেখলাম সবই বাজেকথা। টিকা নেওয়ার পর আমি সুস্থ্য আছি।
টিকা নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দূর্গাপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার বলেন, সরকার অত্যন্ত চমৎকার ব্যবস্থাপনায় টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। আমি ছোটবেলা থেকে অনেক টিকা নিয়েছি। তখন তো টিকা নেওয়া অনেক কষ্টকর ছিল-ঘা হয়ে যেত, ইনফেকশন হয়ে যেত। আজকে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো প্রতিক্রিয়া অনুভূত হল না। মাত্র ৭-৮ সেকেন্ট সময় লাগে। ভয় পাওয়ার কোন কারণই দেখছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, করোনা রোগীর সংখ্যা অনেক কমেছে। এখন জ্বরের রোগী তেমন আসে না। যারা আসেন তাদের আমরা টেস্টের আওতায় আনি। করোনা রোগী কমার পেছনে লকডাউনের প্রভাব রয়েছে। টিকার প্রতিও মানুষের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এ কারণে মণিরামপুরে করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।