ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয়দের লোকজ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অভিযোজন কৌশল সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও উপকূলের লোকায়ত অভিযোজন চর্চা’ বিষয়ক ইউনিয়নভিত্তিক পরিকল্পনা কর্মশালায় তারা এই গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় বারসিক কর্মকর্তা বরষা গাইনের সঞ্চালনায় ও ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের প্রতিনিধি অল্পনা রানী মিস্ত্রির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শফিউল আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য শ্যামলচন্দ্র মন্ডল ও ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বাছাড় প্রমুখ।
কর্মশালার শুরুতে জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্ভুত সংকট মোকাবেলায় কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা চর্চার গুরুত্ব তুলেন ধরে ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বাছাড় বলেন, কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা চর্চা ও অনুশীলনের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট কমানো সম্ভব। কৃষির ভাষায় জৈব সারকে মাটি প্রাণ বলা হয়, যা পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষিত করে। ফলে মাটি, পানি, বায়ু ও প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষিত থাকে। একই সাথে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের নিশ্চিয়তা তৈরি হয়।
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের কৃষক অনিতা রাণী বলেন, নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এলাকার কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। আবার লোকালয়ে লবণ পানি প্রবেশ করায় মাটি চাষ অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এজন্য টেকসই বেড়িবাঁধ যেমন জরুরী, তেমন কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে অভিযোজন চর্চার সাথে কৃষি প্রণোদনাও জরুরী।
অল্পনা রানী মিস্ত্রি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, সেক্ষেত্রে কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখতে লোকায়ত জ্ঞান ও অভিযোজন চর্চার বিকল্প নেই। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে জৈব সার, ভার্মি কম্পোস্ট, গর্ত কম্পোস্ট ও জৈববালাই নাশক ব্যবহার করতে হবে।
জেলেখালী কিশোরী ক্লাবের সদস্য ধৃতিমা মন্ডল বলেন, কৃষকদের গৃহিত উদ্যোগসমূহ বাস্তবায়নে এবং সমস্যা সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়েও কিছু উদ্যোগ যেমন- উপকরণ সহায়তা, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।