নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার খলিষখালিতে শিক্ষকের বাড়ীতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর ছাত্রলীগ নেতা ফারদিন এহছান দীপের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে হামলা ও হুমকি ধামকি অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রলীগের এই নেতার হুমকি ধামকিতে খলিষখালী ও মাগুরা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় স্ধাারন মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত ভাবে ত্রাসসৃষ্টির অভিযোগ উঠার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চরমক্ষুদ্ধ খলিষখালী ইউনিয়নের সাধারন মানুষ। দীপের নেতৃত্বে বিএনপি ক্যাডার রাজু সরদার, বাবলা সরদার, সবুজ সরদার, পারভেজ, লিটন সরদার, কুদ্দুস, জাকির, আহাদ, আলামিন সরদার এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব ক্যাডারদের ভয়ে জীবন নিয়ে শংকিত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী সমর্থকসহ সাধারন মানুষ। ছাত্রলীগ নেতা দীপ এখন আতংকের নাম খলিষখালী ইউনিয়ন জুড়ে। এদিকে দীপের একতরফা হামলার পর পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে ওই এলাকায়।
স্কুল শিক্ষক ইকবাল হোসেন জানান, তিনি ছাত্রলীগ নেতা দীপ বাহিনীর অব্যাহত হুমকির মুখে বাড়ী থাকতে পারছেন না। ২৮ আগষ্ট সকালে তার খলিষখালীর বাড়ীতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাকে খোঁজ করে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি ধামকি দিয়েছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করারও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের ফারদিন এহসান দীপের বিরুদ্ধে।
খলিষখালী শৈব বালিকা বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষকের মাগুরার বাড়ীতে গিয়ে দীপের নেতৃত্বে বিএনপি’র রাজু, কুদ্দুস, সোহাগ সহ ২০/৩০ জন হুমকি ধামকি দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে কয়েক দিন ধরে। দীপ বাহিনীর অব্যাহত হুমকির ফলে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ওই শিক্ষক। প্রতিদিন ওই শিক্ষকের বাড়ীতে গিয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এর ফলে ওই শিক্ষকের পরিবারের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। ২৮ আগষ্ট সকালে খলিষখালী বাজারে আওয়ামী লীগ কর্মী নাজমুল ও আজারুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসী দীপসহ তার ক্যাডার বাহিনী। প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হুমকির ঘটনায় পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থানে গেলে তারা সেখান থেকে সটকে পড়ে। এর আগে ২৭ আগষ্ট বিকেলে খলিষখালী ইউনিয়নের মোকছেদপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী বিশ্বনাথ দাশ (৪৫) ও টিকারামপুর গ্রামের এনামুল ইসলাম রানার (২৬) উপর হামলা করে ছাত্রলীগ নেতা দীপ বাহিনী।
তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ফারদিন এহসান দিপের নেতৃত্বে বিএনপি ক্যাডার রাজু সরদার, বাবলা সরদারসহ বিএনপি, যুবদল ক্যাডাররসহ চরমপন্থী ক্যাডাররা খলিষখালী ইউনিয়নে কাদিকাটি, দুধলিয়া, খলিষখালী হিন্দু অধ্যূষিত গ্রামগুলিয়ে ত্রাসসৃষ্টি করে। তারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এমন অভিযোগ খলিষখালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। ছাত্রলীগ নেতা দিপের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে খলিষখালী ইউনিয়নে সাধারন মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী জানায় ফারদিন এহসান দীপ দীর্ঘ দিন ধরে কাদিকাটি, দুধলিয়া ও খলিষখালী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় জানান, খলিষখালীতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রঙ্গত: গত ২৭ আগষ্ট খলিষখালী শৈব বালিকা বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা ফারদিন এহসান দীপ প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এর ওই ছাত্রলীগ নেতা খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথীর নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে ওয়ার্কাস পার্টিও প্রাথীর পক্ষে অবস্থান নেয়। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার পক্ষে কাজ করা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এমনকি সংখ্যালঘু ভোটার ভয়ভিতি দেখানোসহ নানা ধরনের হুমকি ধামকির অভিয়োগ রয়েছে। এছাড়া বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার নির্বাচনী অফিসে হামলা করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সমীর দাসসহ ৫ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। এঘটনায় ফারদিন এহসান দীপ তখন খলিষখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার হন। পরে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না করে জেলা ছাত্রলীগ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। পদ পেয়ে দীপ বেপরোয়া ওঠে উঠেছে।