আকরামুল ইসলাম : রাজধানীর মিডিয়া হাউজগুলোতে নারীদের সরব উপস্থিতি। অফিস পাড়া কাঁপিয়ে নারী সাংবাদিকরা বেরিয়ে পড়েন মাঠের সংবাদ কভার করতে। টিভির পর্দায় সংবাদ উপস্থাপনাতেও নারীদের উপস্থিতি এখন লক্ষ্যনীয়। লেখাপড়া শেষ করে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবেই বেছে নেন তারা। রাজধানীর চিত্র এমন থাকলেও জেলা সদরগুলোতে মিডিয়া হাউজে কাজ করা নারীদের অংশগ্রহন চোঁখে পড়ার মত নয়।
তবে সংবাদ ভিত্তিক টেলিভিশন নিউজ২৪ ও চ্যানেল২৪ এর সাতক্ষীরার সংবাদ সামলাচ্ছেন দুই নারী সাংবাদিক। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে এই দুই নারী সাংবাদিক কাজ করছেন নিজ উদ্যোমে।
শাকিলা ইসলাম জুই দুই সন্তানের জননী। নিউজ চ্যানেল নিউজ২৪ এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন তিনি। স্বামী মনিরুল ইসলাম মনি রয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সঙ্গে। শহরের টাউনবাজার এলাকার বাসিন্দা এই সাংবাদিক দম্পত্তি।
অন্যদিকে, আমেনা বিলকিস ময়না চ্যানেল২৪ এ সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। স্বামী শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন রয়েছেন দেশটিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে। শহরের পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা এই সাংবাদিক দম্পত্তি।
সাতক্ষীরার নারী সাংবাদিক আমেনা বিলকিস ময়না বলেন, নারীরা পারে না এমন কোন কাজ নেই। নারী হিসেবে আন্দোলন সংগ্রাম প্রতিদিন করে যেতে হচ্ছে আমাদের। আগামীতেও করে যেতে হবে। সাংবাদিকতা পেশাটা চ্যালেঞ্জিং জায়গা থেকে করে যেতে হয়। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, মফস্বলে নারীরা সাংবাদিকতা পেশায় আসতে চাই না। তবে আমার পরিবার থেকে সাপোর্ট রয়েছে। যার আমি সাংবাদিকতা পেশাকে দারুণভাবে উপভোগ করি।
সাতক্ষীরার অপর নারী সাংবাদিক শাকিলা ইসলাম জুই বলেন, ঘর সামলানোর পরও নারীরা সমাজে এখন অনেক এগিয়ে রয়েছে। সাংবাদিকতা পেশাটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং পেশা। মফস্বলে সাংবাদিকতা পেশায় নারীরা আসতে চায় না। পরিবার থেকে তাদের অনুমতি দেয় না। পরিবারের সহযোগিতায় আমি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার এ যুগে সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও চলে প্রতিযোগিতা। অন্য টেলিভিশনের প্রতিনিধি ছেলেদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে কাজ করতে দারুণ লাগে। এটাকে আমি উপভোগ করি। মফস্বলে নারীদেরও সাহস করে এ পেশায় এগিয়ে আসতে হবে বলে আমি মনে করি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি জিএম নুর ইসলাম বলেন, মফস্বল এলাকায় সাংবাদিকতা, সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নারীদের অংশগ্রহন খুবই কম। নারীদের এ পেশায় আসার জন্য আমাদের উৎসাহিত করা উচিত। তবে সমাজের নারীদের অসঙ্গতির বিষয়গুলোর বাস্তবচিত্র মিডিয়ার মাধ্যমে উঠে আসবে। বর্তমানে নারীরা সবক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও মফস্বল এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় নারীরা এখনো পিছিয়ে রয়েছে। মফস্বল এলাকায় পরিবার থেকেও এ পেশায় আসার জন্য নারীদের সুযোগ দেওয়া উচিত।