নিজস্ব প্রতিবেদক: দুদকের জালে আটকে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলর মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রী মিসেস রুমানা আক্তার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে প্রচুর পরিমান সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠেছে এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যাল, চট্টগ্রাম ১ এর সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে প্রেরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন এমরান হোসেন। চসিক কাউন্সিলর ওয়াসিমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে সস্প্রতি রেলওয়ে পুার্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়াকে একটি চিঠি দিয়েছে ইমরান হোসেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুর্নীতিরোধে বিধিবদ্ধ এই প্রতিষ্ঠানটি অনুসন্ধান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার সাথে তার স্ত্রী রোমানা আক্তারের সম্পদেরও অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী চসিকের ১৩নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ আগস্ট দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকার ০০. ০১. ১৫০০. ৬২২. ০৩. ১৭৩. ২৩, চট্টগ্রাম-০১/২৯৭৮০ নং স্মারকমূলে কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে প্রথম একটি চিঠি প্রেরণ করা হয় দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম -১ কে। এর প্রেক্ষিতে গত ২৯ আগস্ট তারিখে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম- ১ ‘০০. ০১. ১৫০০. ৭১২. ০৩. ১৭৩. ২৩. ৩৯৭২’ স্মারকমূলে আরো একটি পত্র সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রেরণ করে সংস্থাটি। এরপর দুদকের মহাপরিচালক (তদন্ত- ২) অনুবিভাগ ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রীর সম্পদ ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে আরো একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রেরণ করে যার ই.আর. নং- তদন্ত-২/১৭৩/২৩/চট্টগ্রাম-১। এই তিনটি চিঠির প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ গত ৮ নভেম্বর তারিখে কাউন্সিলর মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তথ্যাদি/ রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি সরবরাহকরণ’ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্ব) প্রধান প্রকৌশলীকে একটি চিঠি দেন যার স্মারক নম্বর- ০০. ০১. ১৫০০. ৭১২. ০৩. ১৭৩. ২৩. ৬১৬০। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম- ১ এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে মেসার্স নুর নাহার ট্রেডার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারি চসিকের কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রোমানা আক্তারের সম্পদ বিবরণী যাচাই/ অনুসন্ধান করে ২০০৬ সাল থেকে জুলাই ২০২৩ সময়কালে ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর নামে সর্বমোট কত টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে, বছর ভিত্তিক তার একটি প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি এবং প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় (পূর্ব), চট্টগ্রাম থেকে মেসার্স নুর নাহার ট্রেডার্সের নামে পরিশোধিত ঠিকাদারি বিলসমূহের সঠিকতা যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন অনুসন্ধানের সময়সীমা নির্ধারিত থাকায় অতি জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। এবিষয়ে জানতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম ১ এর উপ পরিচালক নাজমুচসাদাত ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন বলেন, তদন্তনাধিন বিষয় বা মামলা সংক্রান্ত কোন বিষয়ে বক্তব্য দিতে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তাই এই বিষয়ে কথা বলতে হলে দুদক প্রধান কার্যালয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন। এবিষয়ে জানতে চসিকের ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর মোবাইলে কল ও বার্তা দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।