নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা গ্রুপিং চরম পর্যায়ে পৌছেছে। এর ফলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা/ কর্মচারীরা। নিজেদের দল ভারী ও প্রভাব ধরে রাখার জন্য একে অপরকে ঘায়েল করার মিশনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি মেয়রের অনুমতিতে একজন কর্মকর্তার পদোন্নতিকে নিয়মবহির্ভুত উল্লেখ করে সচিব খালেদ মাহমুদকে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। এই ঘটনার পরপরই সিইও শেখ মো. তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উল্লেখ করে হারুন উর রশিদ নাম দিয়ে এটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মেয়র বরাবর। উল্লেখিত অভিযোগকারী হারুন উর রশিদ প্রকৌশল বিভাগে কর্মরত দাবি করলেও প্রকৌশল বিভাগে এই নামের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি সামনে আসে। তবে অভিযোগকারীর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিষয়টিকে উরু চিঠি উল্লেখ করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গ্রুপিংয়ের কারনে এমনটি হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান একাধিক ব্যক্তি। কর্মকর্তারা জানা গ্রুপিংয়ের কারনে আমরা কাজ করতে পারছিনা, বিঘ্নিত হচ্ছে সেবা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে। কারো সাথে ভালো করে কথা বললে অপর পক্ষ মনে করেন আমি তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের। এসব কারনে চসিকের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেনা নগরবাসি। চসিক তথা চট্টগ্রামের বৃহত্তর স্বার্থে এসব গ্রুপিংয়ের বিলুপ্তি কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এব্যপারে প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর পিএ রাজিব চক্রবর্তী বলেন, আমি ১৯৮৯ সাল থেকে চসিকে কর্মরত আছি। আমার জানামতে প্রকৌশল বিভাগে হারুন উর রশিদ নামে কেউ নেই।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম। চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, এখানে গ্রুপিং চরম আকারে পৌছেছে। নিজেদের কাজের প্রতি মনযোগী না হয়ে কে কাকে কিভাবে ঠেকাবে, সুনাম ক্ষুন্ন করবে সেই চেষ্টাই করছে। হয়তো তাদেরই কেউ না কেউ এই কাজটি করে থাকতে পারে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিক’র একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ’বিষয়গুলো নিয়ে মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে, তিনি দেশের বাইরে আছেন। দেশে ফিরে এসব বিষয়গুলো সুরাহ করবেন।’
জানা যায়, অবসরে যাওয়ার একদিন আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) এক প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বোর্ড কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই এই পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনায় চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে গত ৭ নভেম্বর। একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চসিকের দুই অফিস সহকারীকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, ’আমার এখানে নিয়ম বহির্ভুত কোন কিছু করার সুযোগ নেই। আমার একার পক্ষে কোনকিছু করা সম্ভবও নয়। আমি নিজে থেকে কিছু করিনা। আমি মেয়র মহোদয় ও সিইও মহোদয়ের আদেশ মতো কাজ করি। পদোন্নতি পাওয়া ব্যক্তি দীর্ঘদিন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি মেয়র মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছেন, মেয়র মহোদয় আমাকে মার্ক করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়ায় আমি সেই মোতাবেক কাজ করেছি। এটা আমার সিদ্ধান্ত নয়। মেয়র মহোদয়ের সিদ্ধান্ত আমি বাস্তবায়ন করেছি। নোটিশের জবাবেও এটা বলে দিয়েছি। অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার এখানে কোন ঠিকাদারি, কেনাকাটা এসব ফাইল আসেনা। স্টাফদের বেতনের ফাইল আসে, এখানে অনিয়মের কি আছে? তবু যদি কেউ সন্দেহ করে তবে তদন্ত করতে পা র্েতদন্তের জন্য আমি সবসময় প্রস্তুত। আমার কোন দোষ থাকলে যা শাস্তি হবে মাথা পেতে নেব।’