
কামরুল হাসান।। অবশেষে চলে গেলেন বরেণ্য ক্রীড়াব্যক্তিত্ব আব্দুর রশিদ কচি। টানা দশ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে হেরে গেলেন তিনি। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে কলারোয়ায় ক্রীড়াঙ্গনসহ শোকস্তব্ধতা নেমে এসেছে সবখানে। গুণী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব আব্দুর রশিদ কচি(৭৬) ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী কলারোয়া ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ওই পদেই তিনি আসীন ছিলেন। পঞ্চাশ বছরের এই দীর্ঘ সময়ে কলারোয়ার ক্রীড়াঙ্গনকে তিনি স্বমহিমায় আলোকিত করেছেন। প্রচারবিমুখ এই মানুষটির নীরব অথচ বলিষ্ঠ কর্মকাণ্ড ক্রীড়া ক্ষেত্রকে দিনে দিনে করেছে প্রশস্ত ও অগ্রগামী। তিনি কলারোয়ার জয়নগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি কলারোয়া পৌর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ পুত্র, ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, গত ১৭ মে রাতে ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সভাশেষে আব্দুর রশিদ কচি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর ব্রেনস্ট্রোক হওয়ায় আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে সাতক্ষীরা সিবি হাসপাতালে নেওয়ার পর গত বুধবার ফের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পরও গত দশ দিনে তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। এ অবস্থায় সোমবার সকাল ১০ টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মরহুমের কলারোয়ার বাসভবনে ছুটে আসেন। সোমবার জোহর নামাজের পর কলারোয়া সরকারি কলেজ ফুটবল মাঠে জানাজাপূর্ব আলোচনা সভায় শোক জ্ঞাপন করে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব। আরও আলোচনা করেন কলারোয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু নসর, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাবেক মেয়র আকতারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব মোল্লা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বাচ্চু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রধান শিক্ষক শেখ তামিম আজাদ মেরিন, কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আহম্মদ আলি, মরহুমের ভাই এমএ রব শাহিন, আব্দুর রকিব লিচু, আব্দুর রউফ বাচ্চু, ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু প্রমুখ। জানাজাপূর্ব আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মীর রফিকুল ইসলাম। জানাজা নামাজে ইমামতি করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল বারী। এরপর বিকেলে নিজ গ্রাম বসন্তপুরে আছর নামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়।