মুরাদ হোসেন বিপ্লব: তত্ত্বাবধায়নের অভাবে অল্প বৃষ্টিতে ফ্লাইওভারে জমেছে বৃষ্টির পানি। এমন চিত্র ধরা পড়েছে চট্রগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে। পানি ও কাঁদার সংমিশ্রণে ফ্লাইওভারের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে পড়েছে পিচ্ছিল। যাতে করে ঘটতে পারে যে কোনো দূর্ঘটনা। ফ্লাইওভারটিতে পানি নিস্কাষনের সুব্যবস্থা না থাকায় পানি জমার এই ঘটনা চোখে পড়ে। ফ্লাইওভারের পানি নিষ্কাশনের জন্য যে পাইপ দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত সরু ও পাইপ লাইনগুলোতে ময়লা জমে পানি নিস্কাসনের অনুপোযুগি হয়ে পড়েছে। দ্রুতগতির যানবাহনগুলো চলাচলের সময় কাদামিশ্রিত এসব পানি ছিটকে পড়ছে ফ্লাইওভারের নিচে।
এছাড়াও বৃষ্টির পানি জমে থাকাতে ফ্লাইওভারে ফাটল সহ বড় ধরনের ধসের ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পানি জমার ঘটনা নতুন নয়। গত বছর মাঝারী বৃষ্টিপাতে ফ্লাইওভারের উপরে পানি জমে ঘটে জলজট। যার চিত্র বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার ধসের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা। অপরিকল্পিত নির্মাণের ফলে অল্প সময়ের মধ্যে ফ্লাইওভারটি ধসে পড়ে। প্রাণ দিতে অনেককে। কিন্তু এতেও টনক নড়েনি দায়িত্বরতদের।
নগরীর অন্যতম ফ্লাইওভার এটি। সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার প্রকল্প ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রস্থের ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৬৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্লাইওভারের মূল অবকাঠামো তৈরির ব্যয় ৪৫০ কোটি ও র্যাম্প-লুপ তৈরির ব্যয় ২৪৬ কোটি টাকা । ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
এ ফ্লাইওভার মুরাদপুর এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পশ্চিম গেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়েছে। কাজ শেষ এরপর সিডিএ ফ্লাইওভারটি হস্তান্তর করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কে। সিডিএ তে অধিক জনবল না থাকার কারণে এবং সঠিক তত্ত্বাবধান না থাকাতে এমনটি ঘটছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব বিবেচনা করে দেখলে এধরনের অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লাইওভার একটি বিশেষায়িত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফ্লাইওভার নির্মাণ শেষে সাধারণ সড়কের মতো ফেলে রাখা হলে ফলাফল শূন্য হবে। পাশাপাশি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা না হলে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে এসব অবকাঠামো। সাধারণ সড়কের মতো মেরামত, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক সাইন ব্যবহার করা না হলে মেয়াদপূর্তির আগেই বিনষ্ট হতে পারে এসব অবকাঠামো। ফলে নির্মাণের পর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত বলে মনে করছেন তারা।