পাহাড় ধসে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা
মো: কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রাম বায়েজিদ ডেবারপাড়, সেরশাহ বাংলাবাজারে অসংখ্য পাহাড় ভূমি দস্যুরা প্রশাসনের সাথে আতাত করে কেটে ফেলেছে। পাহাড় কাটা জায়গা সমূহ মোটা অংকের দাম দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। দিন দিন প্রতিদিন কোননা কোন গ্রæপ রাতের অন্ধকারে পাহাড় কেটে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্ববান কর্মকর্তারা রহস্যজনকভাবে নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিশেষ করে করোনার সংকটে লকডাউনের সুযোগ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়ী এলাকা হিসেবে খ্যাত নাসিরাবাদ বায়েজিদ বোস্তামি ও সীতাকুন্ড উপজেলার অংশবিশেষ ছিন্নমূল এলাকার পাশাপাশি আরফিন নগর, চৌধুরী নগর, চন্দন নগর রাতারাতি পাহাড় শূণ্য হয়ে যাচ্ছে। ভূমি দস্যুরা সেন্ডিকেটের মাধ্যমে সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকে হাতে নিয়ে এই পাহাড় কাটার মহা উৎসবে মেতে রয়েছেন। যা অপ্রিয় হলেও সত্য নাছিরাবাদ এলাকার পাহাড় কাটার বিষয়ে আমরা আমাদের পত্রিকায় অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। সংবাদ পত্রে খবর প্রচার হওয়ার পরও পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি। সেরশাহ বাংলা বাজার ডেবারপাড়ে সরে জমিনে প্রতিবেদন করার জন্য আমরা গেলে ভূমি দস্যুরা আমাদেরকে ভুল তথ্য দিতে থাকে। এমন অবস্থায় পাহাড় নিধনের ফলে ঝুকিতে বিদ্যুৎ টাওয়ার চোখে পড়ে। সেই বিদ্যুৎ টাওয়ার ধসে পড়লে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। ঐ কর্তনকৃত পাহাড়ী তলিতে অসংখ্য পরিবার বসবাস করে যাচ্ছে। অবাক কান্ড হচ্ছে যে, একেবারে বিদ্যুতের খুটির নিচে কাটা পাহাড়কে হেলান দিয়ে বসবাস করছেন জন্মের অন্ধ বৃদ্ধ রুস্তম আলী। তাকে পাহাড় ধসে প্রাণহানি হওয়ার বিষষে জানতে চাইলে সে প্রতিবেদককে বলেন, আমি চোখে দেখি না, এই পাহাড়ের তলিতে আজ দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছি রুস্তম আলীসহ আরও যে সব পরিবার যেখানে বসবাস করে আসছে ঐ বাসা সমূহ মারাত্মকভাবে ঝুকিপূর্ণ ওখানে চারটি কক্ষের পাহাড়ী মাটি পরে চাল নষ্ট হয়ে গেছে। যে কোন মূহুর্তে ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়টি সবাইকে মাটি চাঁপা দিতে পারে। তা জেনেও ওখানে ওরা বসবাস করে আসছে। প্রশাসন এবিষয়ে সম্পূর্ণভাবে নিরবতা পালন করে আসছে বলে সচেতন মহল অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।
ঐ কাটা পাহাড়ের বিদ্যুতের খুটির নিচে যাদের বসতবাড়ি রয়েছে তাদের নাম মিলন, জমিল সাহেব, মনোয়ারা বেগম, রোকেয়া বেগমসহ নাম অজানা আরও অনেকে। তবে বিদ্যুতের লাইন সংযোগবিহীন উচু এলমোনিয়ামের খুটিটি ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ খুলে নিয়ে গেলেও তেত্রিশ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন সংযুক্ত খুটি দুইটি বলবত রয়েছে। যে কোন মূহুর্তে বৃষ্টি হলে কাটা পাহাড়ে ঢলে পড়তে পারে।
পাহাড় দখল পাহাড় কাটার বিষয় সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাইলে সোহাগ বলেন, পাহাড় আমরা কাটিনি, এই জায়গার মালিক নাজমুল ও রাজন। খাস জমি হিসাবে আমরা দখল করি নাই আমরা কিনে নিয়েছি। উল্লেখ্য পাহাড় কাটার কারণে ভূমি ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকা। এছাড়া বন্য প্রাণীর অভয়রাণ্য এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নি:শেষ হচ্ছে বনাঞ্চল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করলেও আইনকে তোয়াক্কা করছেনা ভূমিদস্যুরা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ণ কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পাহাড় কেটে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বোস্তামী সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে। ওই সড়কের আশপাশে এখন ভূমি দস্যুরা পাহাড় কাটার উৎসবে মেতেছে। এছাড়া নগররের শেরশাহ বাংলাবাজার, খুলশী, আকবর শাহ শাপলা আবাসিক এলাকা, চন্দ্রনগরসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১৫ স্থানে চলছে পাহাড় নিধন। সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়।