মো. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিড়ম্বনায় হয়রানীর শিকার হচ্ছে গ্রাহকরা। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল বিষয়ে পল্লিবিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ বিদ্যুতের অসংখ্য গ্রহকদের মুখোমুখি হলে এ প্রতিনিধিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের সীমাহীন বিড়ম্ববনার কথা তুলে ধরে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল বিষয়ে অভিযোগ শুধু চট্টগ্রামে নয়, পুরো বাংলাদেশের। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বরাবরে সংবাদ পত্রের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকেরা উপস্থাপন করেছেন। দেশ তথা পুরো বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের আক্রামনে আক্রান্ত। যখন সাধারণ মানুষ ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ঘরবন্দি হয়ে জীবন যাপন করছেন তখন এক শ্রেনীর অসাধু বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা গ্রাহকের বরাবরে মাত্রারিক্ত সাধারণ বিলের চেয়ে চার গুন বেশি বিদ্যুৎ বিল ইস্যু করে গ্রাহকদেরকে প্রশ্নের সম্মুখিন করেছে।
এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে প্রতিয়মান হয় যে, গ্রামীণ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী অসহায় গ্রাহকেরা অতিরিক্ত বিলের হয়রানির শিকার হয়েছে বেশী। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (ওয়াবদা) গ্রাহকগন যথাক্রমে শিল্প কল-কারখানা, মিল, কুটির শিল্প, সাধারন ব্যবসায়ী কথা দোকানদারদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরের বসবাসরত বাসাবাড়ির গ্রাহকদের অনুকুলে চলতি বাজেটের জুন মাসে ইস্যুকৃত মে মাসের বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত বিলের চেয়ে তিন/চার গুন অতিরিক্ত হারে বিল ইস্যু করেছে। যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। বিশেষ করে টাওয়ারে বসবাসরত ফ্ল্যাটের মালিকদের অনুকুলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল ইস্যুর সংখ্যা বেশী। যেখানে স্বাভাবিকভাবে মার্চ-এপ্রিলে বিল ইস্যু হয়েছিল গড়ে ৪ হাজার টাকা করে। সেখানে মে মাসে ইস্যুকৃত বিলের পরিমাণ ৯ হাজারের অধিক। যাদের ৫-৬ হাজার টাকা বিল হত তাদের নামে বিল ইস্যু হয়েছে ১৫ হাজার টাকারও বেশী। ৮-১০ টাকার বিদ্যুৎ ইস্যু হওয়ার ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকার বিল ইস্যু হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অন্যদিকে দোকান-পাঠ, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারখানা লকডাউনের কারণে দিনের অর্ধ বেলা খেলা থাকলেও কিন্তু তাদের অনুকুলে বিদ্যুৎ ইস্যু হয়েছে, স্বাভাবিক বিলের চেয়ে তিন গুন বেশী।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামে দায়িত্বরত বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা সঠিক উত্তর দিতে অপারগতা জানায়। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল বিষয় জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় এসেছে। জাতীয় টাস্কফোর্স বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের রহস্য উদঘাটনের জন্য সক্রিয় হয়েছে বলে জানা যায়।
অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেরা আরো জানান, ২৪ ঘন্টায় কোন কোন সময় ১২-১৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকতে হয়। যেখানে প্রতিনিয়ত মেরাথন-লোডশেডিং লেগে থাকে সেখানে বিদ্যুৎ বিল কম আসার পরিবর্তে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসা গ্রাহকদের জন্য দুঃখজনক ও রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক। দেশে করোনা রোগের করুন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছেন এবং বিদ্যুৎ বিলের পরিশোধের বিলম্বিত জরিমানা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল ইস্যু থেকে বিরত থাকাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি নির্দেশনা থাকার পরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে অমান্য করে গ্রাহক হয়রানীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে গ্রাহকদের কাছে প্রশ্নবোধক করে তোলার ষড়যন্ত্রের পায়তারা বলে অনেকে মনে করছেন।
তাই জরুরী ভিত্তিতে মে মাসের ইস্যুকৃত বিল বাতিল করে সংশোধন পূর্বক নতুন ভাবে বিল ইস্যু করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি গ্রাহক কল্যান পরিষধের নেতৃবৃন্দ।