সচ্চিদানন্দদে সদয়, আশাশুনি: স্বাধীনতার এত বছর পরও উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনিতে নির্মিত হয়নি একটি ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে প্রতি বছর বৈশাখ ও বর্ষা মৌসুমে দুর্যোগের শঙ্কায় চরম আতঙ্কে কাটে এ উপজেলার লাখো লাখো মানুষের দিন। কালবৈশাখি, নিম্নচাপ ও আকস্মিক জলোচ্ছ্বাসে যে কোনো সময় প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা থেকে যায়।বিগত কয়েক বছরে বড় ধরনের কোনো ঘূর্ণিঝড় না এলেও নদীভাঙন, বেড়িবাঁধ ভাঙা এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার মতো ঘটনাই বারবার উপকূলবাসীর দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বৈশাখ মাস এলেই আকাশের কালো মেঘ আর নদীর গর্জন শুনে আতঙ্কে ভোগে পুরো জনপদ। সেই সঙ্গে ফিরে আসে ভয়াবহ আইলা-সিডরের স্মৃতি।সূত্র জানায়, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন নদীবাঁধগুলোতে বর্ষার শুরুতেই বড় ধরনের ভাঙন ও ফাঁটল ্ইতিমধ্যে দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বেতনা, খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, যার মধ্যে ২৩ কিলোমিটার রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জানান, উত্তাল নদীর পানি ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কারণে ইউনিয়নবাসী দিনরাত আতঙ্কে রয়েছেন।আবহাওয়া অফিসগুলোও ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস দিতে অক্ষম বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস শুধু তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও বায়ুর গতিবেগ রেকর্ড করে ঢাকায় পাঠায়। ফলে বড় কোনো দুর্যোগ দেখা দিলে স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুত সতর্কতা পৌঁছাতে দেরি হয়।পরিবেশবিদরা বলছেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপত্তার স্বার্থে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন এখন সময়ের দাবি। এই কেন্দ্র থাকলে দুর্যোগের আগাম বার্তা দিয়ে উপকূলবাসীর প্রাণ ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে।