প্রাণসংহারী ভাইরাস করোনা সংক্রমণে মানবদেহের ফুসফুস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাইরাসের আক্রমণে ফুসফুস দূর্বল হয়ে যায়. এসময় রোগীর কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে প্রয়োজ হয় ভেন্টিলেটর। করোনাভাইরাসকে কাবু করার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত না হওয়ায় আণুবীক্ষণিক জীবানুটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সবচেয়ে বড় অস্ত্র এখন পর্যন্ত ভেন্টিলেটর। অথচ দেশের সব হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর।
এ পরিস্থিতিতে গাজীপুরের বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ শুরু করেছেন্। প্রতি সপ্তাহে এক হাজার ভেন্টিলেটর তৈরির লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নেই পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর। আর কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের এই যন্ত্রটির অপ্রতুলতারয় বেড়ে গেছে মৃত্যুঝুঁকি। কেবল বাংলাদেশে নয়। ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে দেখা দিয়ে ভেন্টিলেটরের তীব্র সংকট। এ পরিস্থিতিতে দেশের সব হাসপাতালে জরুরিভাবে ভৈন্টিলেটর সরবরাহের জন্য গাজীপুরের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তৈরি করছে হচ্ছে অলট্রানেটিভ ভেন্টিলেটর।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) তৈরি একটি প্রোভেন্টিলেটর এখন পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। আশি শতাংশের বেশি কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সব ঠিক থাকলে শিগগিরই এই ভেন্টিলেটর রোগীদের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের নির্দেশনায় বিএমটিএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি) ‘কনসেপ্ট’ এবং টাইগার আইটির সহযোগিতায় ভেন্টিলেটর তৈরির এ কার্যক্রম চলছে।
আইএসপিআরের পরিচালক আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ বলেন, সেনাপ্রধানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সার্বিক নির্দেশনায় বিএমটিএফকে আর্টিফিশিয়াল ভেন্টিলেটর তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়, সে অনুযায়ী প্রকৌশলীদের সহায়তায় বিএমটিএফ দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি ভেন্টিলেটর তৈরি করতে সক্ষম হয়।
উৎপাদিন ভেন্টিলেটরটি ঢাকা সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুজন রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া গেছে।
বিএমটিএফে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ভেন্টিলেটর তৈরি করা সম্ভব জানিয়ে আব্দুল্লাহ বলেন, সব কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। পরে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্রবাহিনী ২৫ মার্চ থেকে সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।।