
অনার্স পড়ুয়া সাতনদীর সংবাদকর্মীকে নাজেহাল;
প্রধান অভিযুক্তসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও ২জন অভিযানে পুলিশকে সহায়তা করেছে;
নিজস্ব প্রতিবেদক:
খোদ প্রধান আসামীর বাড়ীতে অবস্থান নিয়েই দস্যুবৃত্তি মামলার আসামীদের ধরতে বার ঘন্টার দীর্ঘ নিষ্ফল অভিযান চালিয়েছে দু’থানার পুলিশ। অভিযান চলাকালে দস্যুবৃত্তির সঙ্গে জড়িত একাধিক অপরাধী পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করেছে। তবে দস্যুদের ধরতে না পারলেও পুলিশ মারধোর করে সাতনদীর নিজস্ব প্রতিবেদক এক অনার্স পড়ুয়াকে। তাকে হাতকড়া পরানোর চেষ্টাসহ সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে পুলিশ। ১৫জুলাই বুধবার এ ঘটনাটি ঘটে আশাশুনি উপজেলার মহাজনপুর গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, আশাশুনি থানার ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহিন সালাহউদ্দীন সহ ৩জন অফিসার অভিযানে অংশ নেয়। প্রথমে তারা রাত সাড়ে আটটার সময় মহাজনপুর গ্রামের রিয়াজউদ্দীনের পুত্র সালামের বাড়ীতে অভিযানে যায়। এসময় সালাম বাড়ীতে ছিলনা। অনার্সপড়ুয়া সালামের পুত্র সাতনদীর ক‚ল্যা ইউনিয়ন প্রতিনিধি শাহিনুর ইসলাম শাহিনকে এ সময় পুলিশ চড় থাপ্পড় মেরে হাতকড়া পরাতে যায়। পরে দস্যুবৃত্তির মূলহোতার কাছে ফোন করে শাহিনুর ইসলামেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে এবং মোবাইলে বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করে চলে আসে। এ সময় শাহিনুরের মাতা সাতনদী পত্রিকার পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলেন, তার ছেলে অনার্স পড়ুয়া, সে কোন অপরাধী নয়। এ সময় অভিযানে অংশ নেয়া আশাশুনি থানার একজন দারোগা বলেন, একে নিয়ে যেতে হবে। কান টানলে মাথা আসবে। এছাড়াও অবান্তর বাক্য ছোড়েন তারা। সালামের বাড়ীতে অভিযান শেষে পুলিশ কর্মকর্তারা অবস্থান নেয় ডজন মামলার আসামী এবং পাটকেলঘাটা থানার দস্যুবৃত্তি মামলার প্রধান আসামীর বাড়ীতে। সেখানে রাতে চলে ভুরিভোজ। টোটাল অভিযানে সোর্স হিসেবে কাজ করে ডজন মামলার আসামীর দুই পুত্র এবং দস্যুবৃত্তি মামলার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নাম আসা এক মটর সাইকেল চালক ও একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। ভোর সাড়ে চারটায় দ্বিতীয় দফায় অভিযান চলে সালামের বাড়ীতে। এর পরপরই আলাউল ওরফে উকিলকে মহাজনপুর মাঠে পেয়ে যায় অভিযানে অংশ নেয়ারা। অবস্থা আঁচ করতে পেরে ভোঁদৌড় দেয় সে। এরপর সকালে প্রধান অভিযুক্তের বাড়ীতে অবস্থান নেয় পুলিশ এবং সাতটার সময় চলে আসে তারা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার এসআই শাহিন সালেহ উদ্দীন অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন, বুধবার রাত আটটা থেকে পরের দিন ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে অভিযান চালাই, কিন্তু গ্রেপ্তারের জন্য। তবে তিনি আশাশুনি থানা থেকে অভিযানে অংশ নেয়া দু’জন অফিসারের নাম বলতে পারেননি। দীর্ঘ ১২ঘন্টা একসাথে অভিযানে অংশ নিলেও পরিচয় হয়নি তাদের মধ্যে?
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, পাটকেলঘাটা থানার লিখিত অনুরোধে ২জন অফিসার পাঠিয়েছিলাম, তবে নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হলে তা দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, যশোরের শার্শা থানার বুরুজ বাগান গ্রামের মোঃ ফজর আলী মন্ডলের ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে ছিনতাই করার ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় ২২ ফেব্রæয়ারী একটি দস্যুবৃত্তির মামলা হয়। এই মামলায় নজরুল ইসলাম নজু নামের একজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে রাশেদুল ইসলাম রাশিকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে এই ঘটনার প্রধান আসামীর ইশারায়। রাশেদুল ইসলাম রাশি ঘটনার সাথে জড়িত কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে। রাশেদুল ইসলাম রাশি আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স¤্রাট, সাইফুল, ওজিয়ার, নজরুল, ভুট্টো, সিরাজ এর নাম বলেছে।
অপরদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে রাশেদুলকে চালান দেয়ার সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা ৬ জনের নাম উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, এজাহারে বাদী ৪ জনের জড়িত থাকার কথা বলে ৩৯৪ ধারায় মামলা রেকর্ড করান।