মেহেদী হাসান, খুলনা: খুলনায় কমেছে করোনা সংক্রমনের হার, আর বাড়ছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবনতা। সিভিল সার্জন অফিস বলছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার এই প্রবনতা ও প্রশাসনের ঢিলেমিতে বাড়তে পারে সংক্রমন। আর জেলা করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক বলছেন আগের থেকে দ্বিগুন অভিযান বৃদ্ধি করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায়।
প্রশাসনের লোক থেকে সাধারণ মানুষ কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। বাজার এলাকা থেকে শুরু করে অফিস আদালত ও বাসস্ট্যান্ডেও একই দৃশ্য। অবস্থা এমন যে দেখে বোঝার উপায় নেই খুলনায় করোনা আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। গত বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মোট রোগী রয়েছে খুলনায় ৫৮২০। সুস্থ্য হয়েছেন ৪৭৩৩। মারা গেছেন ৮৪জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগী রয়েছেন ৬১৬ জন।
খুলনায় প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে এপ্রিল মাসে। জুন মাসে করোনায় সংক্রমনের হার বেড়ে যায় সব থেকে বেশি ৮৪ শতাংশ। যা আগষ্ট মাসে কমে হয়েছে ২৭.৬৭ শতাংশ। আর সর্বশেষ সাত দিনে সংক্রমনের হার ১৪.৮২ শতাংশ। আর মৃত্যুহার ১.৪৭ শতাংশ। খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের রোগ নিয়ন্ত্রণ অফিসার শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা গত ০২ সেপ্টেম্বর এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিস বলছে সংক্রমনের হার কমে আসা মানে নিয়ন্ত্রন নয়। এটিকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের তদারকিও বাড়াতে হবে। অন্যথায় সংক্রমনের হার বৃদ্ধির আশংকা থাকে।
এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন খুলনা ডাঃ মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, প্রথমদিকে আমরা যেমন কড়াকড়ি করেছি স্বাস্থ্যবিধির জন্য। এখন সেটি হচ্ছে না। আগের মত ক কড়াকড়ি না করলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা জেলার করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটির সভায় প্রশাসনের কাছে এই অনুরোধই করেছি।
খুলনা জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় খুলনা মহানগরীতে ০৬ জন ও জেলার নয় উপজেলার প্রতি উপজেলায় দুই জন করে ম্যাজিষ্ট্রেট কাজ করছেন।
তার দাবি অন্যান্য সময়ের থেকে অভিযান দ্বিগুন করা হয়েছে। তিনি বলছেন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নো মাস্ক নো ওয়ার্ক বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি তিনি সাধারণ মানুষের প্রতিও আহ্বান জানান।
তাবে এ বিষয়ে নাগরিক নেতৃবৃন্দরা বলছেন, আগে ডাক বাংলার মোড়ে মাইকিং হতো কিন্তু এখন সেটি হয় না। কাগজে কলমে নির্দিষ্ট সময়ের পরে দোকান পাট মার্কেট বন্ধের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। আগে পুলিশ এলাকায় এলাকায় মাইকিং করত, যারা নিয়ম মানছেন না তাদের বাধ্য করতেন নিয়ম মানতে। সেটি এখন বন্ধ প্রায়। এ রকম অবস্থায় আসলে সংক্রমনের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকে। তারা বলেন, প্রশাসনের সকল স্তরকে সমন্বয়ের মাধ্যমেই কাজ করা উচিত।
বর্তমানে খুলনা মহানগরী ও জেলায় সবথেকে বেশি আক্রান্ত নগরীতে। মোট অক্রান্ত রোগীর প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীই মহানগরীতে।