সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা নিয়োগ বাণিজ্য করতে কমিটির অনেক সদস্যকে অন্ধকারে রেখে তড়িঘরি করে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমিটির সকল সদস্যের অংশগ্রহনে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিসহ ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কমিটির আড়ালে রাখা সদস্য, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন। সুখ্যাতি থাকা মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সুষ্ঠু ভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা, উন্নয়নসহ স্বাভাবিক সহযোগিতা বঞ্চিত হয়ে চলে আসছে। মাদ্রাসাটি ১ম শ্রেণি থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস পরিচালনার কথা থাকলেও প্রাথমিক (ইবতেদায়ী) শাখায় কোন শিক্ষার্থী না থাকায় সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে আছে প্রাথমিক বিভাগ। বছর শেষে ৫ম শ্রেণিতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করানোর মত কয়েকজন শিক্ষার্থী ধার করে পরীক্ষায় বসানো হয়ে থাকে। ক্লাস রুম কমপক্ষে ১০টি থাকার কথা থাকলের রয়েছে মাত্র ৫টি। কক্ষগুলো এতটা জরাজীর্ণ ও হুমকীতে রয়েছে যে সেখানে ক্লাস পরিচালনা করার মত পরিবেশ নেই বললেই চলে। মাদ্রাসার বিল্ডিং নির্মান, শ্রেণি কক্ষ সংস্কার ও নির্মান, প্রাথমিকে শিক্ষার্থী যোগাড় করা, নিয়মিত ক্লাস পরিচালনার ব্যবস্থা করা, ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত মিটিং হওয়া, যাতয়াতের পথ উপযোগি করাসহ অনেককাজই খুবই জরুরী হয়ে আছে বছরের পর বছর। কিন্তু সেদিক্ষে কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই। নেতা আছে অনেক কিন্তু নেই উন্নয়নে সহযোগিতা, সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নেই সহযোগিতা ও পরিকল্পনা। এহেন অবস্থার মধ্যে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে অভিভাবক, কমিটির সদস্যসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। ৫টি পদে নিয়োগের জন্য তড়িঘড়ি করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, মিটিং করানো হলেও দাতা সদস্য তোফাজ্জেল হোসেন, অভিভাবক সদস্য সাইফুল ইসলাম, রেজাউল গাজী, হাফিজুর রহমানকে ডাকা হয়নি, স্বাক্ষরও নেওয়া হয়নি এবং অভিভাবক সদস্য শহিদুল ইসলাম ও রুপভান বিবি ভিন্ন জেলায় কাজে থাকায় তাদেরকেও ডাকা হয়নি বলে কমিটির সদস্য ও একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কয়েকদিনের মধ্যে অবসরে যাবেন, সেজন্য তড়িঘড়ি করে তার হাতদিয়েই নিয়োগ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কমিটির একাংশ ও অন্য কোন স্বার্থান্বেষীদের ইশারায় কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের কাছে জানান। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওঃ রুহুল আমিন জানান, হজ্ব থেকে ফিরেই ৫টি পদে নিয়োগ দানের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। ২ আগষ্টের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ১ আগষ্ট পর্যন্ত আয়া পদে ও অন্য পদে ১টি করে আবেদন পড়েছে। ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত কোন ছাত্রছাত্রী নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, উপবৃত্তি ও বিস্কুট না পাওয়ায় মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়না। ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার জন্য কিছু শিক্ষার্থী যোগাড় করে পরীক্ষা দেওয়ানো হয়। সকল সদস্যকে না জানিয়ে মিটিং করা ও রেজুলেশান করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইতস্তত করে বলেন, সদস্য বাইরে থাকায় সব সদস্য জানেনা, সমস্যা আছে আমি এরবেশি মন্তব্য করতে পারবো বলে তিনি শেষ করেন। দ্বাতা সদস্য তোফাজ্ঝেল হোসেন বলেন, আমরা জমি ও অনেক কিছু দিয়েছি। দাতা সদস্য হলেও সিদ্ধান্তের সময় আমাদেরকে ডাকা হয়না। মাদ্রাসার দুরাবস্থার কথা স্বীকার করে তিনি নিয়োগ এর ব্যাপারে কোন কিছু জানেনা বলে ব্যক্ত করেন। অভিভাবক সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, নিয়োগ হচ্ছে আমার জানানেই, আমাকে জানানো হয়নি, রেজুলেশান করা হয়েছে কিনা তাও তিনি জানেনান বলে জানান। এব্যাপারে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও সম্ভব হয়নি।