সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনির খাজরা হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রসায় নাশকতা মামলার আসামীকে সভাপতি করে অবৈধ ম্যানেজিং কমিটি গঠন, বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে সভাপতির ছবি লাগানো, সিনিয়র শিক্ষককে বাদ রেখে বিধি বহির্ভূত সভাপতির পুত্রকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেয়াসহ নানাবিধ অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তার কার্যালয়ে তদন্ত কার্য পরিচালনা করেন। তদন্তকালে অভিযোগকারী খাজরা গ্রামের রিপন হোসেন, তোফাজ্জেল হোসেন, আনারুল ইসলামসহ ৭ ব্যক্তি তাদের অভিযোগের পক্ষে তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে বলেন, খাজরা হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি মাওঃ রুহুল আমিন মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্ব পালনকালে দূর্নীতি ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকান্ডের কারনে তার নামে একাধিক নাশকতা মামলা চলমান আছে। মাদ্রাসায় সুপার ও সহ-সুপার না থাকলে নীতিমালা অনুযায়ী জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা একজন সিনিয়র শিক্ষককে। কিন্তু সভাপতি সেই নীতিমালা অনুসরন না করে তার ছেলে কম্পিউটার অপারেটর আবু রায়হানকে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। এছাড়া সভাপতি নিজ ছেলে কম্পিউটার অপারেটর আবু রায়হান ও পুত্রবধূ নাছিমা খাতুনকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য, ভাইপো শহিদুল ও বোনের মেয়ে রুপভান বিবি এবং নিকটাত্মীয় যশোরের হাফিজুল ইসলামকে বিনা নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য করেছেন। যার ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে সম্পূর্ণ পরিবারতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। শিক্ষক নাসিমা খাতুন নিজে ক্লাস না করে পিরোজপুর গ্রামের শান্ত মন্ডলকে দিয়ে ক্লাস করিয়ে নেন। আবু রায়হান ও তার স্ত্রী নাসিমা খাতুনের নিবন্ধন সার্টিফিকেট ভুয়া যা তদন্ত করলে সত্যতা পাওয়া যাবে। দাতা সদস্য তোফাজ্জেল হোসেনকে কমিটি গঠনের পর থেকে কোনদিন কোন সভায় ডাকা হয়নি। কম্পিউটার অপারেটর থেকে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবু রায়হান অফিস কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ছবির পাশ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নিজ পিতার ছবি টাঙিয়ে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ছবিকে অপমানিত করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের এসআই মিঠুন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার এর পিতার ছবি সরিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দুটি যথাযথ স্থানে স্থাপন করেন। ওইদিন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছবি টাঙানোর ঘটনার জন্য ৩ কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। আমরা অবৈধ সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে করা প্রত্যেকটি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান,ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু রায়হান তদন্ত কার্যক্রমের ব্যাপারে সময়ের আবেদন জানিয়ে গেছেন। অভিযোগকারীদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তিনি আরও বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পেয়েছি। সুপার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, ইউপি চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডালিম, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার হাসানুজ্জামান, আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম আহসান হাবীব, সাবেক সভাপতি জি,এম মুজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমীর রায় প্রমুখ।