নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার খলিষখালির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যখন শান্ত ঠিক সেই মুহূর্তে কিছু মাদক ব্যবসায়ী, মলম পার্টি গডফাদার সবুজ সরদার গ্রুপ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী চক্র আইন শৃঙ্খলা অবনতির জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান সাবির হোসেন মলমপার্টির গডফাদার সবুজ গ্রুপের পক্ষ নিয়ে খুলিষখালী পুলিশ পাঁড়ির এএসআই শামিমের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন।
তথ্য অনুসন্ধানে যানা গেছে, খলিশখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান খান মোক্তার আলী দলুয়া বাজারে ১৯৯৯ সালে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হয়। যার বিচার আদালতে চলমান। দলুয়া বাজারে ২০০৬ সালে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় রবিন ও জায়গীর নিহত হয়। ২০০১ সালে গাছা এলাকায় সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় মহাদেব নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়। এ ঘটনার পরেই খলিশখালির জনপদ আতংকিত হয়ে পড়ে। এসব মামলায় ওয়ার্কাস পার্টির কতিপয় ব্যক্তিরা আসামী হন। অসহায় ব্যক্তিরা এসব হত্যা মামলার এখনো ন্যায় বিচার পাননি। এখানেই শেষ নয় খলিশখালী ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাস্টার লক্ষীকান্ত বাবু ১৯৯৮ সালে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়। পরবর্তীতে ওই অসহায় চেয়ারম্যান এর পরিবার জীবনের ভয়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমায়। এর কয়েক বছর পর সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য দলের সভাপতি মির্জা মাসুদ জুয়েল পাটকেলঘাটার খলিশখালী ইউনিয়নের দুধিলিয়া গ্রামে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও আসামিরা জামিনে থেকে রয়েছে বহাল তবিয়াতে। এ হত্যা মামলার ওয়ার্কাস পার্টির কয়েকজন আসামী হন। সব মিলে খলিষখালী একটি অশান্ত জনপদে পরিনত হয় দীর্ঘ সময়ে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে প্রশাসনের দক্ষ নেতৃত্বে আইন শৃংখলার উন্নতি হতে থাকে। এদিকে গত সাত মাস আগে পুলিশের এ এস আই শামীম হোসেন পাটকেলঘাটার খলিশখালী ক্যাম্পে যোগদানের পরে খলিষখালি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। একাধিক মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে প্রশাসন। গত ৯ অক্টোবর রাত সাড়ে বারোটার দিকে পাটকেলঘাটা খলিশ খালির পুলিশ ক্যাম্পের এসআই শামীম হোসেন এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ক্রাইম জনপদ খলিষখালি কৃষ্ণনগর ব্রিজ এলাকায় পুলিশের টহলরত অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলে গাছা থেকে তিন ব্যক্তি দলুয়া অভিমুখে যাচ্ছিলেন। তাদের গতিবিধি পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয় আসে। তারা হলো তালা থানার ভবানী পুর গ্রমের অভিরামের পুত্র রাকেশ (২০), একই গ্রামের সরজিত সরকারের পুত্র হৃদয় সরকার(২০) তালার খরইল গ্রামের নিরাপদের পুত্র বিশ্বনাথ (২৫) পাটকেলঘাটা থানার কৃষ্ণনগর গ্রামের স্বপন সরকারের পুত্র বাঁধন সরকার (২০)। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কাছে থাকা একটি ল্যাপটপ থেকে বিদেশের কয়েকটি আইডি নামে বে নামে পাওয়া যায় তাদের ল্যাপটপে এবং প্রতারনা মুলক অর্থ আত্মসাৎ এর প্রমাণ পান পুলিশ। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে তাদেরকে সন্দেহ জনক হিসেবে আটক করা হয়। পরবর্তীতে খলিষখারী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ওয়ার্কাসপার্টি সমর্থিত তপন বাছাড়, দিলীপ মন্ডল, শফিকুল ইসলাম সহ কয়েক জন জনপ্রতিনিধির লিখিত সুপারিশে তাদের জিম্মায় প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তার নির্দেশে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে পুঁজি করে এলাকার চিহিৃত মলমপার্টির নেতা একাধিক মামলার আসামী সবুজ সরদার, গাছকাটা ও রাস্তার পিচ চুরি মামলার আসামী বাবলা সরদার, স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ছেলে পরিচয়দানকারী বিতর্কিত উত্তম, মহাদেব হত্যা মামলার আসামি সাব্বির মোল্লা গত সপ্তাহে খলিষখালী পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এলাকার সচেতন একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশ যখন ভালো কাজ করছে তখন নানা অপরাধের সাথে সম্পৃক্তব্যক্তিরা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস দেখায়। ফলে খলিষখালী এখন অনিরাপদ হতে চলেছে। অপরাধীরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠার সুযোগ পাবে।খলিশখালী আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে এলাকার সচেতন মহল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে খলিশখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাব্বির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যেটা শুনেছি সেই মর্মে দরখাস্ত করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ কাঞ্চন কুমার রায় এ ব্যাপারে প্রতিবেদককে জানান তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
খলিষখালী পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শামিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ
পূর্ববর্তী পোস্ট