
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: সুন্দরবনের কচুখালী সীমান্ত চোরাকারবারীদের নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে। ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু, গাঁজা, যৌন উত্তেজক ঔষধ, পাতার বিড়ি ও কেমিক্যাল আসছে এবং হচ্ছে মানবপাচার। কচুখালী, কৈখালী, গোলাখালী ৫ থেকে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে দেশের ৬টি প্রশাসনের নজরদারী এড়িয়ে চোরা চালানের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে চোরাকারবারিরা। কচুখালী সীমান্তে আছে বিজিবি, সুন্দরবনে আছে বনবিভাগ, নদীতে আছে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড, লোকালয় আছে ইউনিয়ন পরিষদ ও থানা পুলিশ।
পরপর বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানে অনেক পাচার ও চোরাকারবারিদের আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেন। এর ফলে প্রশাসনের কঠোর নজরদারীতে চোরা কারবারীরা কোন ঠাসা হয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা জেল থেকে ফিরে আবারও সক্রিয় হয়েছে। বর্তমানে প্রকাশ্য দিবালোকে ভারত থেকে আসা অবৈধ গরু নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে হরহামেশাই। এলাকার দোকান গুলোতে পাতার বিড়ি প্রকাশ্যে বিক্রী হচ্ছে। মাদকের ছোবলে আবারও এলাকা ছেঁয়ে গেছে। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়ে গেছে। একসময় মাদক ও গরু আলাদা আলাদা আসলেও এখন দুটো এক সাথেই আসে। গরু আনতে কিশোর গ্যাং ভাড়া করা হচ্ছে ।চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে সাধারন মানুষ প্রশাসনকে তথ্য দিলে কিশোর গ্যাং হুমকি ধামকি ও হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
ভেটখালী বাজারে এরশাদের চায়ের দোকানে প্রতিদিন চোরাকারবারীরা মিলিত হয়। সেখানে তাদের সাথে দেখা যায় প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে চলা দালালদেরও।
গরু ব্যাবসার প্রধান ভূমিকায় রমজাননগর ইউনিয়নের গোলাখালী গ্রামের মৃত সিয়ামুদ্দীন মোল্যার ছেলে জামির আলী জামু, কালিঞ্চী গ্রামের আকবর তরফদারের ছেলে আব্দুল্লাহ, কৈখালী ইউনিয়নের বৈশালী গ্রামের মৃত ছাকাত গাজীর ছেলে বাবলু, রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আইজুল।
অনুসন্ধানে জানাগেছে যে, ভারত থেকে অবৈধ পথে এই সব গরু প্রবেশ করাতে জামির আলী জামুর হাতে চোরাকারবারিদের দিতে গরু প্রতি বিজিবির জন্য ১ হাজার, বনবিভাগকে ৫শ, নৌ-পুলিশের জন্য ১ হাজার, কোস্টগার্ডের জন্য ৫শ ও থানা পুলিশের জন্য ২ হাজার টাকা।
চোরাকারবারীদের আত্ম-কোন্দলে মাঝে মাঝে গরু ধরা নিয়ে কিশোর গ্যাং এর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মত পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়। চোরা চালান ও মাদকের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার নবাগত পুলিশ সুপার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল নবাগত পুলিশ সুপারের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।